নাটোর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

 


নাটোর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

নাটোর জেলার জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান গুলো হল উত্তরা গণভবন, নাটোর রাজবাড়ি, দয়ারামপুর  জমিদার বাড়ি, চলন বিল চলনবিল,চলনবিল জাদুঘর, হালতি বিল, লালপুরের পদ্মার চর, বুধপাড়া কালী মন্দির ও ধরাইল জমিদার বাড়ি,ইত্যাদি ।


স্থান

দিঘাপতিয়া, নাটোর সদর,নাটোর

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

নাটোর শহরের যে কোন স্থান থেকে সরাসরি রিক্সা বা অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।

শহরের মাদ্রাসা মোড় থেকে উত্তরা গণভবনের রিকশা ভাড়া ৩০ টাকা।

যাতায়াতের জন্য রিক্সা বা অটোরিক্সা রিজার্ভ না নেয়াই ভাল। কেননা নাটোর শহরের সকল স্থানেই স্থানীয় যানবাহন পর্যাপ্ত চলাচল করে।


যোগাযোগ

 নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, নাটোর- ০৭৭১-৬৬৬৫২, ০১৭৬২৬৯২১২২


বিস্তারিত

 নাটোরশহর থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে এক মনোরম পরিবেশে ইতিহাস খ্যাত দিঘাপতিয়ারাজবাড়ী তথা উত্তরা গণভবন অবস্থিত। নাটোরের রাণী ভবানী তাঁর নায়েব দয়ারামেরউপরে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে দিঘাপতিয়া পরগনা উপহার দেন। ১৯৪৭ সালে তৎকালীনপাকিস্তান সরকার জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত করার পর ১৯৫২ সালে দিঘাপতিয়ার শেষরাজা প্রতিভানাথ রায় সপরিবারে রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করে কলকাতায় চলে যান।পরবর্তীতে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত রাজ প্রাসাদটি পরিত্যাক্ত থাকে।

 

১৯৬৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসে এবং সরকারি ভবন হিসেবে সংস্কার হয়। ১৯৭২ সালে এটিকে উত্তরা গণভবন হিসেবে অভিহিত করা হয়। চারিদিকে মনোরম লেক, সুউচ্চ প্রাচীর পরিবেষ্টিত ছোট বড় ১২টি কারুকার্যখচিত ও দৃষ্টিনন্দন ভবন নিয়ে উত্তরা গণভবন ৪১.৫১ একর জমির উপর অবস্থিত। অভ্যন্তরে রয়েছে ইতালী থেকে সংগৃহীত মনোরম ভাস্কর্যে সজ্জিত বাগান, যেখানে রয়েছে বিরল প্রজাতির নানা উদ্ভিদ।

 

বাংলার রাজা-জমিদারদের মধ্যে দিঘাপতিয়া রাজবংশ একটি উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে আছে। দয়ারাম রায় এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। ১৬৮০ সালে নাটোরের প্রখ্যাত কলম গ্রামের এক তিলি পরিবারে দয়ারাম রায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম নরসিংহ রায়। নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা রামজীবন যখন পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়ণের অধীনে চাকুরী করতেন, সে সময়ে তিনি কাজ উপলক্ষ্যে চলনবিল এলাকার কলম গ্রামে পৌছেন। রামজীবন যখন পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়ন ঠাকুরের অধীনে সাধারণ একজন কর্মচারী তখন দয়ারাম তাঁর মাসিক ৮ আনা বেতনে চাকুরী করতেন। পরে সামান্য লেখাপড়া করে জমা খরচ রাখার মত যোগ্যতা অর্জন করেন এবং রামজীবন তাকে মাসিক ৮ আনার পরিবর্তে ৫ টাকা বেতনের মহুরী নিযুক্ত করেন। পরবর্তীতে পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়নের স্নেহ, ভালবাসা ও সহানুভুতি, নবাব সরকারের ভ্রাতা রঘুনন্দনের প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং বাংলার নবাব দেওয়ান মুর্শিদকুলী খানের নেক-নজর সবকিছু মিলে যখন রামজীবন জমিদারী লাভ করেন তখন তারও ভাগ্য খুলতে থাকে। তিনি প্রথমে রাজা রামজীনের একজন সাধারণ কর্মচারী থাকলেও প্রতিভা, দক্ষতা আর বিশ্বস্ততা দিয়ে নাটোর রাজের দেওয়ান পর্যন্ত হয়েছিলেন। রাজা রামজীবন তাকে অত্যন্ত বিশ্বাস করতেন এবং প্রচুর অর্থ-সম্পদ তার কাছে গচ্ছিত রাখতেন। রাজা সীতারাম রায়ের পতনের পর দয়ারাম রায় নাটোর রাজ্যের একজন পরাক্রমশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।

 

যশোহরের রাজা সীতারাম রায় বিদ্রোহী হলে নবাব মুর্শিদকুলী খাঁ নাটোর রাজের দেওয়ান দয়ারাম এর সাহায্যে তাকে দমন ও পরাজিত করে নাটোর কারাগারে বন্দি করে রাখেন। সীতারাম রায়কে পরাজিত করায় নবাব সরকারের দয়ারামের প্রভাব বেড়ে যায় এবং তিনি ‘‘রাই রাইয়া’’ খেতাবে ভুষিত হন। সীতারাম রায়কে পরাজিত করে তিনি মূল্যবান সম্পদসমূহ লুন্ঠন করেন। কিন্তু সীতারামের গৃহদেবতা কৃষ্ণজীর মূর্তি ছাড়া সব রামজীবনের হাতে অর্পন করেন। দয়ারামের এহেন ব্যবহারে রামজীবন খুশি হয়ে দয়ারামকে কৃষ্ণজীর মূর্তি স্থাপনের জন্য পুরস্কার স্বরূপ দিঘাপতিয়ায় একখন্ড জমি দান করেন এবং বর্তমান বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দির চন্দনবাইশা এলাকার নওখিলা পরগনা দান করেন। এটাই দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রথম জমিদারী। পরে তিনি লাভ করেন পরগনা ভাতুরিয়া তরফ নন্দকুজা, যশোহরের মহল কালনা ও পাবনা জেলার তরফ সেলিমপুর। এইভাবে দিঘাপতিয়া রাজবংশের ও জমিদারীর গোড়াপত্তন হয় ১৭৬০ সালে।

বর্তমানে এই রাজপ্রাসাদ থেকে হারিয়ে যাওয়া রাজা-রাণীর ব্যবহৃত ঐতিহাসিক দ্রব্যসামগ্রী উদ্ধার করে একটি সংগ্রহশালা নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। 


চলন বিল জাদুঘর

স্থান

সিংড়া, নাটোর।

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

গুরুদাসপুর এবং সিংড়া এলাকায় চলনবিল বিস্তৃত।  নাটোর শহর থেকে বাস বা অটোযোগে যাওয়া যায়। 

যোগাযোগ
বিস্তারিত

চলন বিল

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিলের নাম চলনবিল। ৩টি জেলা জুড়ে এর বিস্তৃতি। রাজশাহী বিভাগের চারটি জেলা, আটিটি উপজেলা, ৬০টি ইউনিয়ন, ১৬০০ গ্রাম এবং ১৪টি নদী নিয়ে এর বিস্তৃতি। এছাড়া রয়েছে ছোট বড় অনেক জলাশয়। নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার বিস্তৃত অংশ জুড়ে যে জলভূমি, বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে দেখা যায় সেটাই বিখ্যাত চলনবিল। শুকনা মৌসুমে এসব বিলে জল থাকে না। তখন চাষাবাদ চলে বিলের জমিনে। তবে বর্ষায় কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে রূপের পসরা সাজিয়ে বসে। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলনবিল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।


ব্রহ্মপুত্র নদ যখন তার প্রবাহপথ পরিবর্তন করে বর্তমান যমুনায় রূপ নেয়, সে সময়েই চলনবিলের সৃষ্টি। গঠিত হওয়ার সময় চলনবিলের আয়তন ছিল প্রায় ১ হাজার ৮৮ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে এর আয়তন অনেক কমে এসেছে। ১৯১৯ সালে ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়ার হিসেব মতে, চলনবিলের আয়তন ৫০০ বর্গমাইল বা প্রায় ১৪২৪ বর্গকিলোমিটার। অপরদিকে ১৯৬৮ সালের জরিপ মোতাবেক চলনবিলের আয়তন ৮০০ বর্গমাইল বা প্রায় ২০৭২ কিলোমিটার।বর্তমানে চলনবিল অনেকখানি হ্রাস পেয়ে আয়তন দাঁড়িয়েছে ১১৫০ র্গকিলেমিটারে। সংকুচিত হওয়ার পেছনে রয়েছে অনেক কারণ। বর্ষা মৌসুমে বিলে পলি পড়া (২২২.৫ মিলিয়ন ঘনফুট), অপরিকল্পিত বসতবাড়ি স্থাপন, জাতীয় প্রয়োজনে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে নাটোরের বনপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কিলোমিটারের মহাসড়ক নির্মাণ উল্লেখযোগ্য।বিলের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্ত পাবনা জেলার নুননগরের কাছে অষ্টমনীষা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রশস্ততম দিকটি উত্তর-পূর্ব কোনাকুনি। নাটোরের সিংড়া থেকে গুমনী পাড়ের কচিকাটা পর্যন্ত এ বিলের সবচেয়ে বড় অংশ, যা প্রায় চব্বিশ কিলোমিটার দীর্ঘ। নাটোরের সিংড়ার পূর্বপ্রান্ত থেকে পাবনার তাড়াশ উপজেলার ভদাই নদীর পূর্ব পাড় পর্যন্ত বিলের পূর্ব সীমানা।


আসলে চলনবিল অনেকগুলো ছোট ছোট বিলের সমষ্টি। বর্ষায় এই বিলগুলোতে জলপ্রবাহ বেড়ে একসঙ্গে বিশাল এক বিলের সৃষ্টি হয়।চলনবিলের সবচেয়ে বড় অংশ পড়েছে নাটোরে। নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায় রয়েছে চলনবিলের বড় একটি অংশ। এছাড়া সিরাজগঞ্জের হাটিকুমড়ুল থেকে বনপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ সড়ক তৈরি হয়েছে চলনবিলের বুকেই। সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলার বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে চলনবিলের অংশ বিশেষ। চলনবিলের বেশ কয়েকটি বিল পড়েছে এ দুই উপজেলায়। সিরাজগঞ্জের হাটিকুমড়ুল মোড় থেকে বনপাড়া সড়কে প্রবেশ করলে কিছু দূর যাওয়ার পর চলনবিলের যে অংশের দেখা মিলবে সেটাও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মধ্যে। এখান থেকে দক্ষিণ দিকের পুরো অংশটাই এই জেলার অন্তর্গত চলনবিল। পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চলনবিলের অংশ। গাজনা, বড়, সোনাপাতিলা, ঘুঘুদহ, চিরল, গুরকা ইত্যাদি বড় আকারের বিলগুলো বেশিরভাগই পাবনা জেলায়। বড়বিলের আয়তন প্রায় ৩১ বর্গ কিলোমিটার ও সোনাপাতিলা বিলের আয়তন প্রায় ৩৫ বর্গকিলোমিটার। এছাড়া এ বিলের আরও দুটি বৃহৎ অংশ যথাক্রমে ১৮ ও ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কুরলিয়া ও দিক্ষি বিল চাটমোহরে অবস্থিত। বর্ষায় এ বিল থাকে জলে পরিপূর্ণ। পাবনা জেলা সদর থেকে বাসে চাটমোহর এসে সেখান থেকে রিকশায় আসা যায় চলনবিলে। এখানকার মানুষগুলো অনেক সহজ সরল। এরা সকালবেলা ঘুম থেকে কেহ হাল চাষ করতে বের হয় কেহ বা আবার ফসল দেখতে। আমি বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছি গাজনার বিলেন পাশে। ছোট সময় গাজনার বিলে ফটবল খেলতে যেতাম, বৃষ্টিভেজা কাদা ভরা পিছলা মাঠে ফুটবল খেলার মজাই আলাদা, খেলা শেষে বিলের পানিতে গোসল আহ....................


এ অঞ্চলের মানুষের অভিমত, চলনবিল হচ্ছে তাদের শস্যখনি, বাস্তবেও তাই। এখানকার মাটি উর্বর। বিল শুকিয়ে গেলে উর্বর মাটিতে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করেই উল্লাসে ফেটে পড়েন। তারা জানেন স্বল্প ব্যয়ে তাদের গোলা ভরে যাবে। শুধু তাই নয়, বর্ষার শেষ নাগাদ চলে এখানে মাছ ধরার মহোৎসব। সেই হিসেবে চলনবিল মৎস্যখনিও বটে। এখানে পাওয়া যায় দেশি পুঁটি, গজার, বোয়াল, শৈল, টাকি, টেংরা, পাতাসী, খলসা, বাইন, কাঁকলা, চিতল, চেলা, আইকর, শিংসহ নানান ধরণের দেশি মাছ। এই বিপুল মাছের ভাণ্ডারে আছে প্রচুর কাঁকড়া।

চলনবিলে বেড়ানোর জন্য স্থানীয় নৌকা পাওয়া যাবে ভাড়ায়। সারাদিনের জন্য ভালো মানের একটি নৌকার ভাড়া পড়বে ৫শ’ টাকা থেকে ৬শ’ টাকা। এছাড়া ইঞ্জিন নৌকা মিলবে ১ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। সাঁতার না জানলে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নেবেন। নৌকায় ভ্রমণকালে হৈচৈ, লাফালাফি করবেন না।


এই সুযোগে দেখে নিতে পারেন চলনবিল জাদুঘরটিও। গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে এ জাদুঘর। স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল হামিদ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় নিজ বাড়িতে ১৯৭৮ সালে গড়ে তুলেছেন ব্যতিক্রমী এ সংগ্রশালা। চলনবিলে প্রাপ্ত নানান নিদর্শন, মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও এখানে আছে অনেক দুর্লভ সংগ্রহ। নাটোর থেকে বাসে গুরুদাসপুর উপজেলায় এসে সেখান থেকে নদী পার হয়ে রিকশায় আসা যাবে খুবজিপুর গ্রামের এই জাদুঘরে।


স্থান

গুরুদাসপুর, নাটোর

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

গুরুদাসপুর থেকে চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদ রোড হয়ে মহারাজপুর দিয়ে রিক্সা/ভ্যান যোগে চাপিলা শাহী মসজিদে যাওয়া যায়।


বিস্তারিত

গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের চাপিলা গ্রামের মুঘল শাসমনামলে মোঘল সৈনিকদের ফারি ছিল । সে কারণে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। চাপিলা ৩ গম্বুজ মসজিদটি দর্শনীয় স্থান।


গুরুদাসপুর উপজেলার পাটপাড়া গ্রামে মসজিদের ৩টি গম্বুজ আছে ও ৫টি দরজা আছে। মসজিদটি ১৬২৮-১৬৫৮ সালে নির্মিত। বাদশা শাহজাহান এর পুর সুজা বাংলার গর্ভনর নিযুক্ত হন। বাদশা সুজা মিয়া এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। পার্শ্বে একটি পুকুরও আছে। পুকুরে দুটি ঘাট আছে। সম্রাট শাহজাহান এর পুত্র সুজা মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।মসজিদটির দৈর্ঘ ৪৬র্ এবং প্রস্থ ২০র্ । ৫টি দরজা ও ৩টি গম্বুজ আছে। পাঁচশত বছরের পুরাতন মসজিদ। বর্তমানে মুসল্লীগণ নামাজ আদায় করেন।  ইহা দর্শনীয় স্থান।

গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কুসুম হাটি গ্রামে সুলতানী আমলে নির্মিত মসজিদ । মসজিদটির দৈর্ঘ ৪০র্ এবং প্রস্থ ও ২০র্ । আয়তন অনুসারে প্রতীয়মান হয় যে, সম্রাট শাহজাহান এর পুত্র সুজা মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদটির ৩টি দরজা ও ৩টি বড় গম্বুজ ও ৮টি ছোট গম্বুজ আছে। মসজিদটির বহু কারুকার্য খচিত নক্সা রয়েছে। এমনকিট গম্বুজের উপরেও নক্সা রয়েছে।


স্থান

বাগাতিপাড়া, নাটোর।

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

নাটোর শহর থেকে অটো বা বাসযোগে দয়ারামপুর রাজবাড়ি যাওয়া যায়। অটো রিসার্ভ করলে ভাড়া- ১৫০ টাকা । 


যোগাযোগ
বিস্তারিত

বাংলার রাজা-জমিদারদের মধ্যে দিঘাপতিয়া রাজবংশ একটি উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে আছে। দয়ারাম রায় এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর জন্মবৃত্তান্ত আজো রহস্যাবৃত্ত। কারো মতে, দয়ারাম রায় কলম গ্রামের এক তিলি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। রামজীবন যখন পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়ন ঠাকুরের অধীনে সাধারণ একজন কর্মচারী তখন দয়ারাম তাঁর মাসিক ৮ আনা বেতনে চাকুরী করতেন। পরে সামান্য লেখাপড়া করে জমা খরচ রাখার মত যোগ্যতা অর্জন করেন এবং রামজীবন তাকে মাসিক ৮ আনার পরিবর্তে ৫ টাকা বেতনের মহুরী নিযুক্ত করেন। পরবর্তীতে পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়নের স্নেহ, ভালবাসা ও সহানুভুতি, নবাব সরকারের ভ্রাতা রঘুনন্দনের প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং বাংলার নবাব দেওয়ান মুর্শিদকুলী খানের নেক-নজর সবকিছু মিলে যখন রামজীবন জমিদারী লাভ করেন তখন তারও ভাগ্য খুলতে থাকে। অনেকের মতে রামজীবন জলবিহারোপলক্ষ্যে চলনবিলের মধ্য দিয়ে কলম গ্রামে পৌছেন। সে সময় দু’জন বালক রাজার নৌকার সামনে উপস্থিত হয়। দু’টি বালকের একজনের কথাবার্তা ও বুদ্ধির পরিচয় পেয়ে তিনি তাকে নাটোরে নিয়ে আসেন। বালকটিই দয়ারাম রায়।

 

দয়ারাম রায় সিংড়া থানার কলম গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কলমের নরসিংহ রায়ের সন্তান তিনি অনুমান ১৬৮০ সালে তার জন্ম। প্রথমে রাজা রামজীবনের একজন সাধারণ কর্মচারী এবং প্রতিভাবলে নাটোর রাজের দেওয়ান পর্যন্ত হয়েছিলেন। রামজীবন তাকে অত্যন্ত বিশ্বাস করতেন এবং প্রচুর অর্থ-সম্পদ তার কাছে গচ্ছিত রাখতেন। রাজা সীতারাম রায়ের পতনের পর দয়ারাম নাটোর রাজ্যের একজন পরাক্রমশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। যশোহরের রাজা সীতারাম রায় বিদ্রোহী হলে নবাব মুর্শিদকুলী খাঁ নাটোর রাজের দেওয়ান দয়ারাম রায়ের সাহায্যেই দমন ও পরাজিত করে নাটোর কারাগারে বন্দী করেন। সীতারাম রায়কে পরাজিত করায় নবাব সরকারের প্রভাব বেড়ে যায় এবং ‘‘রাই রাইখা’’ খেতাবে ভূষিত হন। সীতারাম রায়কে পরাজিত করে তিনি তার মূল্যবান সম্পদ সমূহ লুন্ঠন করেন, কিন্তু গৃহদেবতা কৃষ্ণজীর মূর্তি ছাড়া সব রামজীবনের হাতে তুলে দেন। দয়ারামের এহেন ব্যবহারে তিনি খুশী হয়ে কৃষ্ণজীর মূর্তি স্থাপনের জন্য দিঘাপতিয়ায় একখন্ড জমি কয়েকটি পরগণা দান করেন। নিঃসন্তান রামজীবন দেওয়ান দয়ারামের পরামর্শেই রামকান্তকে দত্তক গ্রহণ করেন এবং পুত্র রামকান্ত ও ভ্রাতুস্পুত্র দেবী প্রসাদের মধ্যে জমিদারী ভাগ করে নিতে চান। কিন্তু দেবী প্রসাদের একগুঁয়েমী মনোভাবের জন্য সমগ্র জমিদারী রামকান্তের নামে উইল করে দেন। রামকান্তের বিবাহের সময় তিনিই ছিলেন সর্বময় কর্তা। কন্যা পছন্দ, দিন-তারিখ নির্ধারণ, যৌতুক আদায়, আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ সব কিছুর ভারই অর্পিত ছিল দেওয়ান দয়ারামের উপর। রামজীবন মৃত্যকালে দয়ারাম রায়কেই পুত্রের একমাত্র অভিভাবক নিযুক্ত করে যান।

রামকান্ত বালক মাত্র, তাই রাজশাহীর মতো ব্যাপক ও বিস্তৃত জমিদারী পরিচালনা করা তার পক্ষে অসম্ভব। এজন্য প্রকৃত কর্তৃত্ব ছিল দযারাম রায়ের উপর। তাঁর সুদক্ষ ও নিপুণ পরিচালনায় জমিদারীর মর্যাদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরফরাজ খাঁনের সময় ১৩৯ পরগনার স্থলে রাজশাহী জমিদারী গরগণার সংখ্যা দাড়ায় ১৬৪ তে। রামকান্ত বয়ঃপ্রাপ্ত হলে স্বাধীনভাবে এবং স্বহস্তে জমিদারী পরিচালনার ইচ্ছা প্রকাশ করলে দয়ারাম রায় অবসর গ্রহণ করেন এবং দিঘাপতিয়ায় রাজবাড়ী নির্মাণ করতে থাকেন। যুবক রামকান্ত বিরাট জমিদারী, প্রচুর সম্পদ, সুন্দরী স্ত্রী, অশেষ মান-সম্মান লাভ করে সুখ-স্বাচ্ছন্দে ছিলেন। কিন্তু দয়ারাম রায়ের অবসর গ্রহণের পর কিছু অসাধু আমাত্যবর্গ দ্বারা পরিবেষ্ঠিত হন এবং বিভিন্ন প্রকার আমোদ-আহলাদে কালাতিপাত করতে থাকেন। পুন্যবতী স্ত্রী রাণী ভবানীর শত উপদেশ সত্ত্বেও যথারীতি রাজকার্য পরিচালনায় মনোনিবশে করতে পারেননি। ফলে নবাব সরকারের প্রচুর রাজস্ব বাকি থাকে। এ সময় দয়ারাম রাজকার্যে মনোনিবেশ এবং যথারীতি রাজস্ব প্রদান করতে উপদেশ দেন। নবাব আলিবর্দ্দী খাঁ জমিদারী দেবী প্রসাদকে অর্পন করলে অবশেষে দয়ারাম রায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং জগৎশেঠের সহযোগিতায় পুনরায় তা ফিরে পান। ১৭৪৮ সালে রাজা রামকান্তের মৃত্যু হলে দয়ারাম রায় রাণী ভবানীর পাশে থেকে জমিদারী পরিচালনা করেন। তাঁর সুদক্ষ পরিচালনায় রাণী বর্গীয় আক্রমণের সমস্যা কিছুই বুঝতে পারেননি। রাণী ভবানীর একমাত্র কন্যা তারার বিয়ের সময় তিনিই ছিলেন প্রধান কর্মকর্তা। জামাতা রঘুনাথের মৃত্যুর পর দয়ারামই তাকে দত্তক গ্রহণে সম্পূর্ণ সাহায্য করেন। রাণী ভবানী দয়ারাম ও তারা এ দু’জনের সাথে পরামর্শ করেই বিষয়কার্য পরিচালনা করতেন। রাণী ভবানী দয়ারামকে অত্যন্ত বিশ্বাস করতেন এবং অনেক সময় নিজ নামে কার্য পরিচালনার সুযোগ দিতেন। দয়ারাম সে সময়ে রাণীর পরামর্শ ছাড়া বাহ্মণদের ব্রহ্মোত্তর দান করেন। এ বিষয়ে রাণী ভবানীর কোন আপত্তি ছিল না, কারণ তাঁর বিশ্বাস বৃদ্ধ মন্ত্রী দয়ারাম রায় নাটোর রাজের মঙ্গল ছাড়া কোন সময়ে অমঙ্গল কামনা করেন না। কিন্তু রাজকুমারী তারা দয়ারামের এ কাজটিকে সমর্থন করতে পারেননি। তাঁর মতে, রাজকর্মচারী অন্য কোন কাজ করলেও প্রকৃত মালিকের অনুমতি না নিয়ে ভূ-সম্পত্তি দান করতে পারেন না। তিনি দান অসিদ্ধ ঘোষনা করেন। দয়ারাম রায় এ সময়ে রাণী ভাবানীর সাথে সাক্ষাৎ করে সব কথা খুলে বলেন। প্রকাশ্য যে, ভবানীর বিবাহের সময় রামজীবনের পরিবর্তে দয়ারাম রায়ই বিবাহের কাগজে সহি করেন। দয়ারাম রায় সেই জীর্ণ কাগজটি রাণীর সামনে ধরে বলেন যে, যদি দয়ারামের স্বাক্ষরে ব্রহ্মোত্তর অসিদ্ধ হয়, তবে এ বিয়েও সিদ্ধ হয়নি। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে তারা সুন্দরী মনোভাব ত্যাগ করেন এবং দয়ারামের কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন। ১৭৬০ সালের দিকে রাণী ভবানী একবার রাজ্যচ্যুত হন। সে সময়ে দয়ারাম রায় কিছুদিনের জন্য জেল খাটেন বটে, কিন্তু রাণী ভবানীকে রাজ্য ফিরিয়ে দিয়ে তবেই তিনি ক্ষান্ত হন। নাটোর রাজের গগণস্পর্শী উত্থানে দেওয়ান দয়ারাম রায়ের অবদান অনস্বীকার্য। কখনও তিনি সেনানায়ক রূপে শক্ত হাতে অশি পরিচালনা করেছেন, কখনও বিদ্ব্যান ব্যক্তির মত কলম হাতে নিয়ে জমিদারীর হিসাব রেখেছেন। কখনও ভূষণায়, কখনও ভাতুরিয়ায়, কখনও বড়নগর-মুর্শিদাবাদে ছুটাছুটি করেছেন। রঘুনন্দন নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন সত্য কিন্তু দেওয়ান দয়ারমের সুদক্ষ পরিচালনার জন্য উক্ত রাজবংশ তৎকালে এত খ্যাতি অর্জন করতে পেরেছিলেন।


লর্ড ক্লাইভ এদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা করেন সত্য কিন্তু লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস সে শাসন ব্যবস্থাকে স্থায়িত্ব দেন। কিশোরী চন্দ্র মিত্র রঘুনন্দনকে নাটোর রাজের ‘‘ক্লাইভ’’ এবং দয়ারামকে ‘‘ওয়ারেন হেস্টিংস’’ বলে অভিহিত করেছেন। নাটোর রাজের উত্থান ও শ্রীবৃদ্ধিতে দেওয়ান দয়ারাম রায়ের যে অশেষ অবদান ছিল সেকথা স্বীকার করে মৃত্যুর ২শত বছর পরেও উক্ত রাজবংশের মহারাজা শ্রী যোগীন্দ্রনাথ দৃঢ়কন্ঠে বলেছেন, ‘‘রাই রাইয়া দয়ারাম রায় নাটোর রাজবংশের কতখানি আপন জন ছিলেন সেকথা জানিতেন দয়ারাম, জানিতেন তৎকালীন নাটোরাধিপাতিগণ এবং জানে বাংলার ইতিহাস। তাঁহার কথা লিখিতে গেলে বহুশত পৃষ্ঠা লিখিলেও তাঁহার অদ্ভুত ও অপূর্ব গুণরাজি সম্পূর্ণ আলোচনা করা সম্ভব হইবে না


১৭৬০ সালে ৮০ বছর বয়সে তিনি ৫ কন্যা, ১ পুত্র ও প্রচুর সম্পদ রেখে ইহলীলা ত্যাগ করেন। দেওয়ান দয়ারাম রায়ই প্রথমে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ী নির্মাণ করেন যা এখন উত্তরা গণভবন নামে খ্যাত।


দিঘাপতিয়া রাজা প্রমথনাথ রায়ের (১৮৪৯-১৮৮৩) জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রমদানাথ রায় ১৮৯৪ সালে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর তার তিন কনিষ্ঠ ভ্রাতা কুমার বসন্ত কুমার রায়, কুমার শরৎকুমার রায় এবং কুমার হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জন্য বড়াল নদীর তীরে নন্দীকুজা নামক স্থানে ‘‘দিঘাপতিয়া জুনিয়র রাজ দয়ারামপুর এস্টেটস’’ স্থাপন করেন। তাদের প্রপিতামহের পিতাসহ নাটোরের রাণী ভবানীর অসাধারণ দক্ষ দেওয়ান ও দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা দয়ারামপুরের নামানুসারে এই এলাকার নাম হয় দয়ারামপুর, আর বাড়ীর নাম হয় ‘‘দয়ারামপুর জমিদারবাড়ী’’। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদান রাখায় পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে শহীদ লেঃ কর্ণেল আব্দুল কাদিরের নামে এই জায়গায় কাদিরাবাদ সেনানিবাস স্থাপিত হয়।

স্থান

ফকিরচাঁদ বৈষ্ণব গোঁসাইজির আশ্রম

লালপুর, নাটোর।

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

নাটোর সদর থেকে বাস ও অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।


যোগাযোগ
বিস্তারিত

লালপুর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে দুড়দুড়িয়া নওপাড়ায় (পানসীপাড়া) গহীন অরণ্যে ১১০৪ বঙ্গাব্দে বটগাছের নীচে আস্তানা স্থাপন করেন ফকির চাঁদ বৈষ্ণব। এখানেই সাধু ধ্যান, তপস্যা ও বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার আরম্ভ করেন।

 

মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ, সান বাঁধানো বিশাল পুকুর, নয়নাভিরাম প্রাধান ফটক, অতিথিশালা, ভক্তশালা ও অনুপম শৈলীতে গড়া বিশাল আশ্রম। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমা, গঙ্গা-সড়বান ও নবানড়ব উৎসব উপলক্ষে দেশ-বিদেশের সহস্রাধিক ভক্ত-সাধক সমবেত হতেন। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এখনো অনুষ্ঠানের সময় অসংখ্য মানুষ এখানে সমবেত হন।

 

সাধু ফকির চাঁদ বৈষ্ণবের মৃত্যুর পর নওয়াপাড়ার জমিদার তারকেশ্বর বাবু তাঁর স্মরণে সমাধিটি পাকা করে দেন। ভক্তদের সুবিধার্থে জমিদার ৬৮ বিঘা জমি এবং সান বাঁধানো বিশাল দু’টি পুকুর আশ্রমের নামে দান করেন। আশ্রম চত্ত্বরে দালান-কোঠা নির্মাণেও তিনি সহযোগিতা করেন।

বনপাড়া লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী

বনপাড়া, বড়াইগ্রাম, নাটোর।

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

নাটোর সদর থেকে বাস ও সিএনজি অটোরিক্সা যোগে প্রথমে বনপাড়া যেতে হবে; ভাড়া- ৩০ টাকা। 

এরপর বনপাড়া থেকে রিকশাযোগে সরাসরি চার্চে যাওয়া যায়; রিকশা ভাড়া- ২০ টাকা।  

 

যোগাযোগ
বিস্তারিত

লুর্দের রাণী মা মারীয়া ধর্মপল্লী তথা বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন। খ্রিস্টধর্ম পরিচালনা কর্তৃপক্ষকে বলা হয় খ্রিস্টমন্ডলী বা সংক্ষিপ্তাকারে শুধু মন্ডলী। মন্ডলী কর্তৃপক্ষের মূল পরিচালনা কেন্দ্র ভাটিকান বা রোম। স্থানীয়ভাবে খিস্টধর্ম বিশ্বাসী জনসাধারনকে পরিচালনা ও আধ্যাত্মিক পরিচর্যা করা/সেবা দানের উদ্দেশ্যে গঠিত/পরিচালিত একটি সাংগঠনিক কর্মএলাকাকে ধর্মপল্লী বলা হয়। ‘লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী’ ঈশ্বরপুত্র যীশু খ্রিস্টের জাগতিক জননী মারীয়া বা মরিয়ম-এর পূণ্য নামের স্মৃতিতে উৎসর্গিত।

 

নাটোর জেলার দক্ষিন সিমানায় বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার ৫টি ও ১ নং জোয়াড়ী ও ৫ নং মাঝগ্রাম ইউনিয়নের ২টি সহ মোট ০৭টি গ্রাম নিয়ে এই ধর্ম পল্লী প্রতিষ্ঠিত। ঐতিহ্যবাহী বড়াল নদীর দক্ষিনে বনপাড়া নামক একটি গ্রামে ধর্মপল্লীর জন্য নির্ধারিত র্গীজাটি অবস্থিত। যেখানে ১৯৪০ সালের দিকে প্রথম স্বর্গীয় ফাদার থমাস কাত্তানের(পিমে), একজন ইতালীয় ধর্মযাজক সর্ব প্রথম আসেন এবং ছবিতে দেওয়া গীর্জাঘরটি স্থাপিত হয় ১৯৫৮ সালে।

 

ধর্মপল্লীর অর্ন্তগত গ্রামগুলিতে প্রায় ৭ হাজার ক্যাথমিক খ্রিস্টধর্ম বিশ্বাসী মানুষ বসবাস করেন। খ্রিস্ট বিশ্বাসীগণের মধ্যে ৯৫ শতাংশ বাঙ্গালী এবং ৫ শতাংশ সাঁওতাল ও অন্যান্য আদিবাসী। সাধারণত, খ্রিস্ট বিশ্বাসীগণ এলাকার গ্রামগুলোতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীগণের সাথে (ইসলাম ধর্মাবলম্বী- মুসলমান ও সনাতন ধর্মাবলম্বী-হিন্দু) মিলেমিশে পাশাপাশি বসত করেন।

ধর্মপল্লী বা গির্জা প্রশাসনের অধিনে একটি হাই স্কুল (সেন্ট যোসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয়) ও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় (সেন্ট যোসেফস্ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সেন্ট জেভিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়) পরিচালিত হয়। এছাড়া প্রায় ৪৫০ দরিদ্র আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীর অবস্থানের জন্য পৃথক ছাত্র ও ছাত্রীনিবাস পরিচালিত হয়। এলাকার হাজার হাজার দরিদ্র নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের জন্য একটি সেলাই কেন্দ্র পরিচালিত হয়। এছাড়া এলাকার প্রসূতি মায়েদের সেবা দানের জন্য উনিশ শ ষাটের দশকে এখানে স্থাপিত হয় দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র যা এলাকার হাজার হাজার প্রসূতি মাকে নিরাপদ মাতৃত্বে সহায়তা প্রদান করেছে। ধর্মপল্লী কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা, আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সহযোগীতায় এখানে বহু ব্রীজ-কালভাট ও রাস্তাঘাট নির্মিত রয়েছে। মূলত এ এলাকার শিক্ষা, সামাজিক, অর্থনৈতিক, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নে এখানকার গির্জা কর্তৃপক্ষ ও খ্রিস্ট বিশ্বাসীগণের রয়েছে বিরাট ভূমিকা।

 

বর্তমানে দুইজন পুরোহিত ধর্মপল্লী পরিচালনা ও পরিচর্চার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। তারা হলেনঃ (১) ফাদার দিনো জ্যাকোমিনেল্লী, পিমে, (২) ফাদার আন্তনী হাঁসদা।

তথ্য সংগ্রাহক- ভিক্টর কে. রোজারিও

রাণী ভবানী রাজবাড়ী

স্থান

বঙ্গজ্জল, নাটোর সদর, নাটোর

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

নাটোর শহরের যে কোন স্থান থেকে সরাসরি রিক্সা বা অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।

শহরের মাদ্রাসা মোড় থেকে রাজবাড়ীর রিকশা ভাড়া ২০ টাকা। 

যাতায়াতের জন্য রিক্সা বা অটোরিক্সা রিজার্ভ না নেয়াই ভাল। কেননা নাটোর শহরের সকল স্থানেই স্থানীয় যানবাহন পর্যাপ্ত চলাচল করে।


যোগাযোগ
বিস্তারিত

মোঘল শাসনামলে কামদেব মৈত্র ‘সরকার’ উপাধি প্রাপ্ত হন। রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাজা নরনারায়নের সময়ে লস্করপুর পরগার অন্তর্ভুক্ত বাড়ইহাটি গ্রামের একজন তহশীলদার ছিলেন কামদেব সরকার। তহশীলদারী কাজের জন্য তাকে সময়ে সময়ে পুঠিয়ার রাজ দরবারে আসা-যাওয়া করতে হতো। পুঠিয়া সে সময় ছিল বিখ্যাত জ্ঞান অর্জনের স্থান। তাঁর তিন পুত্র রামজীবন, রঘুনন্দন ও বিষ্ণরাম পুঠিয়া থেকে লেখাপড়া করতেন। তিন পুত্রের মধ্যে দ্বিতীয় তথা মধ্যম পুত্র রঘুনন্দন ছিলেন বুদ্ধিমান। তিনি মনযোগ সহকারে লেখাপড়া করেন এবং তৎকালীন রাষ্ট্রীয় ভাষা পারসীতে বুৎপত্তি লাভ করেন। তিনি পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়নের সহযোগিতায় নবাব সরকারে চাকুরী প্রাপ্ত হন। রঘুনন্দন নবাব সরকারে ক্রমান্বয়ে প্রাধান্য বিস্তার করেন এবং বড় ভাই রামজীবনের নামে অনেক জমিদারী বন্দোবস্ত করে নেন। এভাবে রামজীবন রাজা উপাধি পেয়ে নাটোরে রাজ্য স্থাপন করেন।
রামজীবনের জমিদারী প্রাপ্তি বা রাজা হবার পেছনে বেশ কিছু অলৌকিক কাহিনী আছে। যেমন কারও মতে রামজীবন ও রঘুনন্দন প্রথম জীবনে পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়ণের পূজার ফুল সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। একদিন ফুল তুলতে তুলতে রামজীবন ক্লান্ত হয়ে বাগানের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েন। এমন সময় দর্পনারায়ন সে পথ দিয়ে গমনের সময় দেখতে পান যে, রামজীবনের মাথার উপর দু’টি বিষধর সাপ ফণা বিস্তার করে কঠিন সূর্যের তাপ থেকে তাকে রক্ষা করছে। এরূপ অলৌকিক ঘটনা রাজ্য প্রাপ্তির পূর্বভাস বলে লোকে বিশ্বাস করতো। রাজা দর্পনারায়ণও সে বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে রামজীবনকে ডেকে বলেন,‘‘তুমি রাজা হবে, তবে রাজা হয়ে যেন পুঠিয়া রাজ্য গ্রাস করো না’’। পরবর্তীতে রাজা দর্পনারায়ণের মাধ্যমেই রামজীবন নাটোর রাজবংশের প্রথম রাজা হিসাবে প্রতিষ্ঠা পান।

 

অনেকের মতে কামদেবের তিন পুত্র পুঠিয়া থেকে লেখাপড়া করতেন। তিনি পুত্রের মধ্যে মধ্যম পুত্র লেখাপড়ায় খুব ভালো ছিলেন। তার হাতের রাজশ্রী দেখে রাজা দর্পনারায়ণ ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন, তিনি রাজা হবেন। সে সময় থেকে রাজা দর্পনারায়ণ রঘুনন্দনকে খুব স্নেহের চোখে দেখতেন এবং তার লেখাপড়ার প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখতেন। কোনো এক সময় নবাব মুর্শিদকুলী খাঁ রাজা দর্পনারায়ণকে মুর্শিদাবাদে ডেকে পাঠান। রাজার সঙ্গে রঘুনন্দনও মুর্শিদাবাদে গমন করেন। মুর্শিদকুলী খাঁ রঘুনন্দনের প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হন এবং তিনি দর্পনারায়ণকে অনুরোধ করলে রঘুনন্দনকে রেখে পুঠিয়ার ফিরে আসেন। তারপর রঘুনন্দন তার প্রতিভাবলে নবাবের দেওয়ান পর্যন্ত নিযুক্ত হন এবং ভাই রামজীবনের নামে বহু জমিদারী বন্দোবস্ত করেন।

ইতিহাস ও কিংবদন্তী না প্রক্ষেপ থেকে দেখা যায়, কেউ বলেন কামদেব মৈত্র যাজনিক ব্যবসা করতেন, আবার কারো মতে তিনি ছিলেন তহশীলদার। কারো মতে কামদেশ মৈত্রের তিনপুত্র, আবার কারো মতে দুইপুত্র যথা- রামজীবন ও রঘুনন্দন পুঠিয়া থেকে লেখাপড়া করতেন। অনেকের মতে পুঠিয়ার রাজার পূজার ফুল সংগ্রহ করে দিতো এবং সে সময় মাথার ওপর সর্পছত্র বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজা দর্পনারায়ণ তাদের প্রতি সবসময় নজর রাখতেন। এসব ঘটনার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব না। তবে এটুকু বলা যায় যে, মাথার ওপর সর্পছত্র বিস্তার করা যেমন আশ্চর্যজনক, তেমনি কোন রাজা, মহারাজার নেক নজরে পড়াও কম আশ্চর্যজনক নয়। এক্ষেত্রে বলা যায় যে, তাদের ভাগ্যলক্ষ্ণী সুপ্রসন্ন ছিল, তাই রাজা দর্পনারায়ন তাদের প্রতি স্নেহের দৃষ্টি দিয়েছিলেন। রামজীবন ও রঘুনন্দনের রাজ্য প্রাপ্তির পিছনে এত কল্পকথা জড়িয়ে আছে। বস্তুত রঘুনন্দন রাজা দর্পনারায়ণের প্রেরণায় এবং নিজের প্রতিভাবলে বিদ্যা অর্জন করেন। তার যোগ্যতা পরিচয় পেয়ে রাজা দর্পনারায়ণ রঘুনন্দনকে রাজ প্রতিনিধি করে রাজধানী ঢাকায় প্রেরণ করেন। নবাব মুর্শিদকুলী খাঁ তখন বাংলা নবাব দেওয়ান। মুর্শিদকুলী খাঁ রঘুনন্দনকে খুব বিশ্বাস করতেন। এমটি রঘুনন্দন সামান্য কর্মচারী থেকে সমগ্র বঙ্গের একজন বিশেষ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। রঘুনন্দন সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন এবং রাজস্ব প্রদানের অক্ষম জমিদারের জমি তিনি নিলামে ক্রয় করে ভাই রামজীবনের নামে বন্দোবস্ত নেন।

 

বাংলা ১১১৩ সালে (১৭০৬ ইং) পরগনা বানরগাছির বিখ্যাত জমিদার গণেশরাম রায় ও ভগবতীচরণ চৌধুরী যথারীতি রাজস্ব করতে না পারায় জমিদারীচ্যুত হন। দেওয়ান রঘুনন্দন উক্ত পরগণা ভ্রাতা রামজীবনের নামে বন্দোবস্ত নেন। নাটোর রাজবংশের এটাই প্রথম রাজ্যলাভ।

সম্ভবতঃ ১৭০৬ ইং থেকে ১০৭১০ ইং সালের মধ্যে নাটোর রাজবাড়ী নির্মিত হয়েছিল। রামজীবনের জমিদারীর রাজধানী নাটোরে স্থাপনকে কেন্দ্র করে অনেক বিচিত্র জনশ্রুতি আছে। যেমন মায়ের আদেশে রাজা রামজীবন ও রঘুনন্দন নিজ জন্মভূমিতে রাজধানী স্থাপনের জন্য উপযুক্ত একটি স্থানের সন্ধান করতে থাকেন। এক বর্ষাকালে রঘুনন্দন রাজা রামজীবন ও পন্ডিতবর্গ নৌকারোহনের সুলক্ষণযুক্ত পরিবেশে রাজধানী স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচনে বের হন। ঘুরে ঘুরে তারা ভাতঝাড়া বিলের মধ্যে উপস্থিত হন। বিলের একটি স্থানে তারা দেখতে পেলেন যে, দু’টি সাপ সাঁতার দিয়ে বিল পার হচ্ছে। এবং একটি ব্যাঙ ছোট একটি সাপকে গিলে খাচ্ছে। পন্ডিতবর্গ উক্ত স্থানকেই রাজধানী নির্মাণের স্থান হিসাবে উপযুক্ত বলে মত প্রকাশ করায় তারা সেখানেই রাজবাড়ি নির্মাণ করবেন বলে স্থির করেন। রাজবাড়ি নির্মাণ করার পর রাজ-আমলা, কর্মচারী বহুবিধ লোকের সমাগমে অল্পদিনের মধ্যে বিলটি একটি শহরে পরিণত হয়। সেই পরিণত শহরই নাটোর।

মহারাণী ভবানীর স্মৃতি বিজড়িত নাটোর। ৪৯.১৯২৫ একর জমির ওপর নাটোর রাজবাড়ী নির্মিত হয়েছিল। রাজা রামজীবন নাটোর রাজবাড়ীর প্রথম রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন ১৭০৬ মতান্তরে ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন এবং সে বছরেই মৃত্যুবরণ করেন। রাজা রামজীবনের মৃত্যুর পর রামকান্ত ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দে নাটোরের রাজা হন। অনেকের মতে ১৭৩০ থেকে ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজা রামজীবনের দেওয়ান দয়ারাম নাটোরের তত্ত্বাবধান করতেন। রাজা রামকান্ত তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ ১৭৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নাটোরের রাজত্ব করেন।

 

দয়ারামপুর রাজবাড়ি 

 

সকাল ৯:০০টা থেকে বিকাল ৫:০০টা পর্যন্ত  ১০ টাকা মুল্যের টিকেট ক্রয় করে এখানে প্রবেশ করা যায়। 

যেকোন প্রয়োজনেঃ সহকারী কমিশনার(ভূমি), নাটোর সদর, নাটোর- ০১৭৬২৬৯২১২০

শহীদ সাগর

স্থান

গোপালপুর, নাটোর।

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

নাটোর সদর থেকে বাস ও অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।


যোগাযোগ
বিস্তারিত

১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ লালপুর উপজেলার গোপালপুরের ৪ কিলোমিটার উত্তরে ময়না গ্রামে খান সেনাদের এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পরেরদিন পাক সেনাদের মেজর রাজা খান চুপিসারে পালানোর সময় স্থানীয় জনগণ তাকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া ঈশ্বরদী বিমান বন্দরে যেন পাক সেনা অবতরণ করতে না পারে সেজন্য স্থানীয় মুক্তিকামী জনগণ মিলের বুলডোজারসহ অন্যান্য যানবাহনের সহায়তায় বিমান বন্দরের রানওয়ে ভেঙ্গে অকেজো করে দেন।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গোপালপুরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল তবুও অত্র এলাকার আখচাষীদের স্বার্থে জাতীয় প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখার জন্য মিলের সকলেই যার যার দায়িত্বে ন্যস্ত ছিল।

 

সেদিনছিল ৫ মে, চারিদিকে থমথমে অবস্থার মধ্যেও মিলের কাজ চলছিল। সকাল ১০-০০ টার দিকে লাল শালু কাপড়ের ব্যান্ড পরা কিছু রাজাকারের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনীর একটি দল অতর্কিতে মিল ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রবেশ করে এবং ময়নার যুদ্ধ এবং পাক সেনা কর্মকর্তার হত্যার মিথ্যা অভিযোগে তৎকালীন মিলের প্রশাসক জনাব লেঃ আনোয়ারুল আজিম এবং অন্যান্য কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারীদের ডেকে বর্তমান অতিথি ভবনের সামনের পুকুরের পার্শ্বে ব্রাশ ফায়ারে নির্মমভাবে হত্যা করে পুকুরের পাড়ে ফেলে চলে যায়।

 

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর উল্লিখিত পুকুরটি ‘‘শহীদ সাগর’’হিসেবে নামকরণ হয়। যতদুর জানা যায় ‘‘শহীদ সাগর’’নামকরণের পূর্বে পুকুরটি ‘গোপাল সাগর’নামে পরিচিত ছিল। উল্লেখ্য ১৯৭৩ সালে শহীদ আনোয়ারুল আজিম এর স্মরণে স্থানীয় গোপালপুর রেলওয়ে ষ্টেশনটি ‘‘আজিমনগর ষ্টেশন’’নামে অভিহিত হয়।

হালতি বিল

স্থান

নলডাংগা, নাটোর 

কিভাবে যাওয়া যায় 

দর্শনীয় স্থান 

নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড় থেকে জনপ্রতি ৩০ টাকা করে অটোতে করে যাওয়া যায়, তবে অটো রিসার্ভ করে গেলে ভাড়া ২০০ টাকা

 

বিস্তারিত

হালতির বিল বা হালতি বিল নাটোর সদর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে নলডাঙ্গা থানার অন্তর্গত বিল। এটি অত্র অঞ্চলের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।[১]

বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে এখানে পাটুল থেকে খাজুরা পর্যন্ত যে রাস্তা আছে সেটাই বেশি আকর্ষনীয়। বর্ষায় যখন পানিতে পরিপূর্ণ হতে থাকে বিল, তখন এই রাস্তার সৌন্দর্য বাড়তে থাকে। পর্যটকের ভিড় তখন বাড়তে থাকে।

বিলের ভিতরে দ্বীপের মত যে ছোট ছোট গ্রাম আছে, সেগুলো আরো মনোমুগ্ধকর।

 

 

বর্ণনা

উত্তরাঞ্চলে কোনো সমুদ্র নেই, তাই এ অঞ্চলের মানুষের কাছে সমুদ্রসৈকত এক স্বপ্ন। তবে নাটোরের হালতি বিল এখন সমুদ্রের অভাব অনেকটাই পূরণ করছে এই এলাকার সাগরপিয়াসী মানুষদের। হালতি বিলের উত্তাল জলরাশি আর ঢেউ যে কারো মন নিমেষেই ভালো করে দেয়ার মত। বর্ষায় অথৈ পানি আর শীতে ফসলি জমির এই বিলের মাঝ বরাবর ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক নির্মাণ করা হয় ২০০৪ সালে।


পর্যটন আকর্ষণ

পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে অনেক দোকানপাট, হোটেল ইত্যাদি। এই বিলে প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসছেন সমুদ্রের স্বাদ নিতে। বিলের সামনের পাটুল-খাজুরা রাস্তায় যেতেই চোখে পড়বে বড় অক্ষরে লেখা সাইনবোর্ড 'পাটুল মিনি কক্সবাজার'। পথ ধরে দু'কদম গেলেই চোখে পড়বে উত্তাল জলরাশি।


ভ্রমণের উপকারিতাঃ

জীবনের প্রয়োজনে,চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে আপনাকে আপনার এলাকার সম্পর্কে দর্শনীয় স্থানসমূহ বিশেষ ব্যক্তিবর্গ এবং আপনার এলাকার বিশেষ বিশেষ কিছু নিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্ন করতেই পারেন এবং ম্যাক্সিমাম সময় প্রশ্ন করে তাই আপনার এলাকা সম্পর্কে আপনার নিজের জানা উচিত তাই আপনার এলাকার সম্পর্কে আমরা খুঁটিনাটি সকল তথ্য তুলে ধরেছি। ভালোভাবে বাচাঁর তাগিদে যেমন সবসময় উন্নত জীবনযাত্রার কথা ভাবতে হয়। তেমনি মানুষিক সাস্থ্যের কথা ভেবে নিজ দেশে বা দেশের বাহিরে ঘুরতে যাওয়া ও প্রয়োজন। জেনে রাখা ভালো বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ। নিজ জেলার বা অন্য যে কোন জেলার উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামসংখ্যা দেখুন আলাদা আলাদা জেলার ছবিগুলোতে।সারাবছর ভ্রমণের স্থানসমূহ উন্মুক্ত থাকলেও আমরা সাধারণত শীতকালে ভ্রমণ করতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করি।

জেনে নিন ভ্রমণের দরকারি টিপসঃ

শীতকালীন ছুটিতে ঘুরতে বা বেড়াতে যাওয়া আরামদায়ক তাই শীতকালে পরিবার পরিজন নিয়ে যেকোন ভ্রমণস্পটে বা পিকনিকে যাওয়া খুবই আনন্দদায়ক।এই শীতে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায় তা নিয়ে অনেকেই ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন। কোথায় ঘুরতে যাবেন তার আগে প্রয়োজন প্রস্তুতি । ঘুরতে যাওয়ার আগে ভালো প্রস্তুতির উপর নির্ভর করবে ভ্রমণ কতটা আনন্দময় হবে। 

সাথে রাখুনঃ

জাতীয় পরিচয়পত্র, স্থানীয় জরুরি ফোন নম্বরসমূহ, হোটেল বা কটেজ সমূহের ঠিকানা ও ফোন নম্বর। শীতবস্ত্র, পানির বোতল, রোদের চশমা, ফোনের চার্জার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ, অতিরিক্ত অর্থকরি।

কোথায় যাবেনঃ

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে নির্ধারণ করে নিন আপনি কোথায় যেতে চান। বেড়াতে যাওয়ার আগে দেখুন কোন জেলার কোথায় কি কি দর্শণীয় স্থান রয়েছে। দেখে ভেবে নিন কোথায় বেড়াতে যাবেন। শীতকালের জন্য ভ্রমণের উপযোগী স্থানসমূহ হলো সাগর, পাহাড়, হাওড়, বন, নদী ঠিক কোন জায়গা আপনার বেশি পছন্দ সঙ্গে কাদের নিয়ে যাবেন। যেখানে যাবেন সেখানকার সুযোগ-সুবিধা কেমন। এই বিষয়গুলো চিন্তা করলেই আপনি পেয়ে যাবেন কোথায় যাওয়া ভালো্। 

কিভাবে যাবেনঃ

ভ্রমণে পরিবহন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।আপনি বাস, ট্রেন, প্রাইভেট কার, লঞ্চ কোনটায় যাবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। ফোনে বা কারো মাধ্যমে রাস্তার লোকেশন জেনে নিন।


Previous Post
Next Post
Related Posts