রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ Beautiful Heritage places of Dinajpur district of Rangpur division

 


রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ আপনারা যারা এখনো বাংলাদেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানসমূহ দেখেননি তারা ঘুরে আসতে পারেন রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানসমূহ তাতে আপনার মন শরীর সবই ভালো থাকবে।

রংপুর জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো হল কারমাইকেল কলেজ, তাজহাট রাজবাড়ী, ভিন্নজগৎ, রংপুর চিড়িয়াখানা, পায়রা বন্দর, ঘাঘট প্রয়াস পার্ক, চিনিকল পার্ক, রানি পুকুর, তনকা মসজিদ ইত্যাদি।

দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ Beautiful  Heritage places of DINAJPUR DISTRICT



নয়াবাদ মসজিদ

নয়াবাদ মসজিদ দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়াবাদ গ্রামে অবস্থিত। জেলা সদর থেকে ২০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে ঢেপা নদীর পশ্চিম তীরে এর অবস্থান। ১.১৫ বিঘা জমির উপর মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক মসজিদটি সংস্কার করা হয়েছে। মসজিদের সামনে একটি মাদ্রাসা স্থাপিত হয়েছে।

মসজিদের প্রবেশদ্বারের ওপর ফারসি ভাষায় রচিত লিপি থেকে জানা যায়, সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সময় ২ জ্যৈষ্ঠ, ১২০০ বাংলা সনে (১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। মসজিদের নির্মাণ সম্বন্ধে জনশ্রুতি অনুযায়ী আঠারো শতকের মধ্যভাগে যখন বিখ্যাত কান্তজী মন্দির নির্মিত হয়, তখন পশ্চিমা দেশ থেকে আগত মুসলিম স্থাপত্যকর্মীরা পার্শ্ববর্তী নয়াবাদ গ্রামে মোকাম তৈরী করেন এবং সেখানে এ মসজিদ নির্মাণ করেন।
তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি আয়তাকার। এর চারকোণায় রয়েছে চারটি অষ্টভুজাকৃতির টাওয়ার। বাইরের দিক থেকে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১২.৪৫ মিটার এবং প্রস্থ ৫.৫ মিটার। দেয়ালের প্রশস্ততা ১.১০ মিটার। মসজিদে প্রবেশের জন্য পৃর্বদিকে রয়েছে তিনটি খিলান। মাঝের খিলানের উচ্চতা ১.৯৫ মিটার, প্রস্থ ১.১৫ মিটার। পাশের খিলানদ্বয় সমমাপের এবং অপেক্ষাকৃত ছোট।
উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে দুটি জানালা রয়েছে। প্রবেশদ্বার ও জানালার খিলান বহু খাঁজযুক্ত (multi-cusped)। মসজিদের ভিতরে পশ্চিম দিকে রয়েছে তিনটি মিহরাব। মাঝের মিহরাবের উচ্চতা ২.৩০ মিটার এবং প্রস্থ ১.০৮ মিটার। দুই পাশের মিহরাব দুটি অপেক্ষাকৃত ছোট। মসজিদের তিনটি অর্ধগোলাকৃতির গম্বুজের মধ্যে মাঝেরটি অন্য দুটির তুলনায় কিছুটা বড়। গম্বুজের অবস্থান্তর পর্যায়ে পেন্ডেন্টিভ ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদের কার্নিশ এবং প্যারাপেট সমান্তরাল।
মসজিদের চার কোণের কর্নার টাওয়ারের মধ্যে ২টির উপর (উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম কোণের) কুপলা রয়েছে। বাকি দুটির উপরে ছোট গম্বুজ। গম্বুজদ্বয় বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত। কর্নার টাওয়ারগুলি সাদামাটা ইট ও পলেস্তারা দিয়ে তৈরি। কর্নার টাওয়ারের গায়ে চারটি ব্যান্ড আছে। টাওয়ারগুলি ক্রমশ সরু, উপরে ছোট গম্বুজ।
সমস্ত দেয়াল জুড়ে আয়তাকার বহু পোড়ামাটির ফলক রয়েছে। পোড়ামাটির নকশাগুলি বহু জায়গায় খুলে পড়েছে। ফলকগুলির আয়তন ০.৪০ মি×০.৩০ মি । ফলকগুলির মধ্যে লতাপাতা ও ফুলের নকশা রয়েছে। একটিতে জোড়া ময়ুরের প্রতিকৃতিও রয়েছে। এরূপ মোট ১০৪টি আয়তাকার ফলক রয়েছে, তবে ফলকের মধ্যে অলংকরণের অনেকটাই প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত।

কিভাবে যাওয়া যায়:HOW TO GO

নয়াবাদ মসজিদ দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়াবাদ গ্রামে অবস্থিত। জেলা সদর থেকে ২০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে ঢেপা নদীর পশ্চিম তীরে এর অবস্থান।



দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ Beautiful  Heritage places of DINAJPUR DISTRICT

কান্তনগর মন্দির

কান্তনগর মন্দির ইটের তৈরী অষ্টাদশ শতাব্দীর মন্দির। দিনাজপুর শহর থেকে প্রায় ১২ মাইল উত্তরে এবং দিনাজপুর-তেতঁলিয়া সড়কের প্রায় এক মাইল পশ্চিমে ঢেপা নদীর পারে এক শান্ত নিভৃতগ্রাম কান্তনগরে এ মন্দিরটি স্থাপিত। বাংলার স্থাপত্যসমূহের মধ্যে বিখ্যাত এ মন্দিরটির বিশিষ্টতার অন্যতম কারণ হচ্ছে পৌরাণকি কাহিনীসমূহ পোড়ামাটির অলঙ্করণে দেয়ালের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ নবরত্ন বা ‘নয় শিখর’যুক্ত হিন্দু মন্দিরের চুড়া হতে আদি নয়টি শিখর ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের সর্বৎকৃষ্ট টেরাকোটা শিল্পের নির্দশন রয়েছে এ মন্দিরে।

মন্দিরের নির্মাণ তারিখ নিয়ে যে সন্দেহ ছিল তা অপসারিত হয় মন্দিরের পূর্বকোণের ভিত্তি দেয়ালের সঙ্গে সংযুক্ত সংস্কৃত ভাষায় লেখা কালানুক্রম জ্ঞাপক একটি শিলালিপি থেকে। সূত্র অনুযায়ী দিনাজপুরের মহারাজ প্রাণনাথ ১৭২২ সালে এ মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং তাঁর স্ত্রী রুকমিনির আদেশে পিতার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য মহারাজের দত্তকপুত্র মহারাজ রামনাথ ১৬৭৪ সালে (১৭৫২) মন্দিরটির নির্মাণ সম্পন্ন করেন। যা হোক, বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মহারাজা গিরিজানাথ বাহাদুর ধ্বংস হয়ে যাওয়া নয়টি শিখর বাদে মন্দিরটির ব্যাপক পুনর্গঠন করেছিলেন।

এ জমাকালো পিরামিড আকৃতির মন্দিরটি তিনটি ধাপে উপরে উঠে গিয়েছে এবং তিন ধাপের কোণগুলির উপরে মোট নয়টি অলংকৃত শিখর বা রত্ন রয়েছে যা দেখে মনে হয় যেন একটি উচুঁ ভিত্তির উপর প্রকান্ড অলংকৃত রথ দাঁড়িয়ে আছে। মন্দিরের চারদিকে খোলা খিলান পথ রয়েছে যাতে যে কোন দিক থেকেই পূজারীরা ভেতরের পবিত্র স্থানে রাখা দেবমূর্তিকে দেখতে পায়।

বর্গাকৃতির মন্দিরটি একটি আয়তাকার প্রাঙ্গনের উপর স্থাপিত। এর চারদিকে রয়েছে পূজারীদের বসার স্থান যা ঢেউ টিন দ্বারা আচ্ছাদিত। বর্গাকার প্রধান প্রকোষ্ঠটিকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ ইমারত নির্মিত হয়েছে। পাথরের ভিত্তির উপর দাঁড়ানো মন্দিরটির উচ্চতা ৫০ ফুটেরও বেশি। ধারণা করা হয়, গঙারামপুরের(দিনাজপুর) নিকট বাননগরের প্রাচীর ধ্বংসাবশেষ থেকে নির্মাণ উপকরণ এনে এটি তৈরি করা হয়েছিল। বাইরের দিকে উচুঁ করে তৈরী তিনটি চতুষ্কোণাকার প্রকোষ্ঠ এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এ ধরণের নকশা কেন্দ্রীয় প্রকোষ্ঠটিকে শক্তিশালী করেছে, তাই উপরের বিরাট চূড়াটিকে এ প্রকোষ্ঠটির পক্ষে ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।

বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাকি আটটি অলংকৃত চূড়া নিচের দু’তলার ছাদের আটটি কোণে সংযোজন করা হয়েছিল। নিচতলার বাঁকা কার্নিস কোণগুলিতে এসে ঝুলে আছে। এর মধ্যবাগ কিছুটা উঁচু হওয়ায় ভিত্তি থেকে এর উচ্চতা দাড়িয়েছে ২৫ ফুট, যার দ্বিতীয় তলার উচ্চতা ১৫ ফুট এবং তৃতীয় তলার ৬‘-৬‘‘। নিচের চারকোণের প্রত্যেকটির সঙ্গে একটি করে ছোট প্রকোষ্ঠ রয়েছে এবং এগুলি দ্বিতীয় তলার উপরে স্থাপিত কারুকার্য খচিত অষ্টকোণাকৃতির কোণের বুরুজগুলির ভর বহন করছে। নিচতলার প্রার্থনা ঘরের চারদিকে মন্দিরে মোট চারটি আয়তাকার বারান্দা রয়েছে।

নিচতলার প্রত্যেক দিকের প্রবেশ পথে বুহু খাঁজ যুক্ত খিলান রয়েছে। সমৃদ্ধ অলংকরণ যুক্ত দুটি ইটের স্তম্ভ দ্বারা প্রতিটি খিলানকে পৃথক করা হয়েছে। নিচতলার চার প্রকোষ্ঠের বাইরে মোট ২১টি খিলান দরজা আছে, আর দ্বিতীয় তলায় এ খিলান দরজার সংখ্যা ২৭টি। ছোট হয়ে আসা তৃতীয় তলার মাত্র তিনটি প্রবেশ দরজা এবং তিনটি জানালা রয়েছে। পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় বারান্দা থেকে ২‘-৩‘‘প্রশস্ত সংর্কীণ সিঁড়ি পথ উপরে উঠে গিয়েছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন এ প্রবেশ পথ এঁকে বেঁকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় উঠে গিয়েছে।
পূজারীদের চালার বাইরে প্রধান মন্দিরের প্রায় একশগজ দূরে আগাছায় ছাওয়া একটি এক চূড়া বিশিষ্ট ছোট ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির রয়েছে। প্রচলিত ধারণা মতে মহারাজ প্রাণনাথ ১৭০৪ সালে এ মন্দিরটি তৈরি করে এখানে কৃষ্ণের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি সাময়িকভাবে বৃন্দাবন থেকে আনা হয়েছিল। নবরত্ন মন্দির তৈরি সমাপ্ত হলে এ মূর্তিটি এখানে স্থানান্তর করা হয়। এটি এখন একটি পরিত্যক্ত দেবালয়। এ মন্দিরটি ছিল ১৬ পার্শ্ব সম্বলিত সৌধ এবং এর উচ্চতা ছিল ৪০ ফুট এবং এর দক্ষিণ দিকে প্রবেশ পথে ছিল বহু খাঁজবিশিষ্ট খিলান।

পোড়ামাটির অলংকরণ ভিত্তি থেকে শুরু করে মন্দিরের চূড়া পর্যন্ত ভেতরে ও বাইরে দেয়ালের প্রতিটি ইঞ্চিতে তিনটি পৌরাণিক কাহিনীর অনুসরণে মনুষ্য মূতি ও প্রাকৃতিক বিষয়াবলি বিস্ময়করভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মহাভারত ও রামায়ণের বিস্তৃত কাহিনী এবং অসংখ্য পাত্র-পাত্রীর বিন্যাস ঘটেছে এখানে।

কৃষ্ণের নানা কাহিনী, সমকালীন সমাজ জীবনের বিভিন্ন ছবি এবং জমিদার অভিজাতদের বিনোদনের চিত্র প্রতিভাত হয়েছে। পোড়ামাটির এ শিল্পগুলির বিস্ময়কর প্রাচুর্য, মূর্তির গড়ন কোমল ভাব ও সৌন্দর্য এত যত্নের সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে, বাংলার যে কোন ম্যূরাল চিত্রের চেয়ে তা অনেক উৎকৃষ্ট। কেউ যদি মন্দির দেয়ালের অলংকরণের দৃশ্য যে কোন দিক থেকে গভীর মনোযোগের সঙ্গে দেখেন এবং বিষয়বস্তুকে সমন্বিত করেন, তবে এর বিষয় বৈচিত্র দেখে অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হবেন।মন্দিরের বাইরের দেয়ালের পোড়ামাটির অলংকরণের সাধারণ যে চিত্র, তাতে চারদিকের ভিত্তি প্যানেলের নিম্নাংশে চিত্রগুলি সমান্তরাল ভাবে চারটি প্রবেশ পত্রের দিকে এগিয়ে গিয়েছে।

এ দিক থেকে ভিত্তির একটু উপরেই ক) লতা পাতার মধ্যে প্রস্ফুটিত গোলাপ এবং এর বিকল্প হিসেবে কোথাও চারটি ধাতুর পাতে ধাতব প্রলেপযুক্ত ডিজাইন খ) স্ত্তম্ভের কার্নিসে যে প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তার মধ্যে সমসাময়িক সামাজিক চিত্র ও মাটির খন্ডে তৈরী অভিজাত জমিদারদের শিকারের দৃশ্য প্রস্ফুটিত হয়েছে গ) উপরের সমান্তরাল প্যানেলে সূক্ষ্ম জটিল অলংকরণের মাঝে প্রস্ফুটিত গোলাপ ছিল, যা সাধারণভাবে ষাট গম্বুজ মসজিদ, বাঘা মসজিদ, কুসুম্বা মসজিদ ও ছোট সোনা মসজিদ প্রভৃতির গায়ে লক্ষ্য করা যায়।

দ্বিতীয় পর্যায়ের অলংকরণের উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ হচ্ছে বনের ভেতর শিকার দৃশ্য,হাতি, ঘোড়া, উট সহযোগে রাজকীয় শোভাযাত্রা এবং অভিজাতদের জন্য চমৎকারভাবে তৈরী গরুর গাড়ি। তাদের গায়ে ছিল মুগল পোশাক ও অস্ত্র। সুন্দরভাবে সজ্জিত হাতি এবং ঘোড়া। এদের সঙ্গে যুক্ত রথসমূহ কারুকার্য সমৃদ্ধ ছিল। অলংকৃত পালকিতে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা নাদুস-নুদুস দেহের জমিদার, হাতে তার বিলাসী হুক্কা। হুক্কার অন্যদিকে লম্বা নল থেকে ধূঁয়ার কুন্ডুলি ছুড়ছেন। অন্যদিকে নদীর দৃশ্য রয়েছে, যেখানে লোকজনে ঠাসা সর লম্বা নৌকায় সকলে আন্দোৎসবে মগ্ন।

ছোট ছোট সৈন্যদলের গায়ে রয়েছে ইউরোপীয় পোশাক, খোলা তলোয়ার ও শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায় তারা এগিয়ে যাচ্ছে। তৃতীয় ধাপের অলঙ্করণে রয়েছে পৌরাণিক কাহিনীর চিত্রণ। এখানে লৌকিকভাবে কৃষ্ণর প্রতিকৃতি তৈরী করা হয়েছে। এ পর্যায়ের পোড়ামাটির অলঙ্করণে রয়েছে দানব রাজা কংস কিশোর কৃষ্ণকে বধ করতে উদ্ধত, কৃষ্ণ কর্তৃক রাক্ষস পাতনা এবং সারস গলার দানব বাকাসুর হত্যা, গোবর্ধন পার্বতকে উপরে ফেলে কেশি হত্যা; স্বর্প দানব কালিয়াকে দমন এবং লম্বা সরু নৌকায় কৃষ্ণের আনন্দ ভ্রমণ ইত্যাদি। মন্দিরের দক্ষিণ মুখে কিছু বিভ্রান্তকর দৃশ্যসহ রামায়ণের কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রামায়ণের কাহিনীর চিত্র পূর্ব প্রান্তের সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এখানে পঞ্চবটীর বনে রাম চন্দ্র, সীতা ও লক্ষণের বনবাসের রুপায়ণ রয়েছে, সূর্পনখার নাকে আঘাতরত লক্ষণ, দন্ডকের বন থেকে রাবন কর্তৃক সীতা অপহরণ; রাবণের রথকে বাঁধা প্রদানে জটায়ুর ব্যর্থ প্রচেষ্টা, অশোক বনে সীতার বন্দি জীবন; কিশকিন্দিয়ার সিংহাসনের জন্য বালী এবং বানর অনুসারী সহ সুগ্রীভের যুদ্ধ। এছাড়াও আকর্ষণীয় ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রাম চন্দ্রের সপ্ততলা বেদ এবং বানর অনুসারীসহ রামচন্দ্রের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় রত ছিলেন সুগ্রীভ।
উত্তর দিকের প্রতিমূর্তিগুলির মধ্যে প্রাধান্য বিস্তার করেছিল কৃষ্ণ বলরাম। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কৃষ্ণের বিভিন্ন বিয়ের ছবি; গোয়ালিনী দন্ডের দু্ই মাথায় ঝোলানো শিকায় (পাটের ঝোলা) দুধ ও দৈ বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। অলঙ্করণের দ্বিতীয় ধাপে একটি আকর্ষণীয় ইউরোপীয় যুদ্ধ জাহাজ খোদিত হয়েছে। এখানে সূক্ষ্ম ও বিস্তারিতভাবে দৃশ্যমান রয়েছে সৈনিক এবং কামান।

পশ্চিম দিকের পুরো অংশেই তৃতীয় ধাপের সূক্ষ্ম অলঙ্করণে কৃষ্ণ কাহিনীর বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। এ অলঙ্করণ শেষ হয়েছে মধুরার দানব রাজা কংসকে হত্যার মধ্য দিয়ে। এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কংসের দানবাকৃতির খুনে হাতি কবল্লপীড়ার ধ্বংস, মথুরায় কংসের সঙ্গে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে কৃষ্ণকে অংশগ্রহণে বিরত করতে না পেরে রাধার জ্ঞান হারানো। এসব চিত্রের মধ্যে দন্ডের দুই প্রান্তে ঝোলানো শিকাতে দুধ ও মাখন বহন করা গোয়ালার চিত্র খুবই আকর্ষণীয়, যা এখনও গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত দৃশ্য।

বহু খাঁজ বিশিষ্ট খিলানের স্প্যান্ড্রিলের উপরে সম্প্রসারিত প্যানেলে চমৎকারভাবে দৃশ্যমান করা হয়েছে মহাকাব্যগুলির প্রাণবন্ত যুদ্ধের দৃশ্যাবলি। এতে আরও দেখানো হয়েছে একটি বৃত্তের ভেতর নৃত্যরত রাধাকৃষ্ণের যুগলশূর্তিসহ রস-মন্ডল ও এর সাথে অন্যান্য সহায়ক মূর্তি। কুরুক্ষেত্র ও লঙ্কার প্রচন্ড যুদ্ধের দৃশ্যাবলি রুপায়নে স্থানীয় লোকশিল্পীদের কল্পনা ও প্রচুর প্রাণশক্তির প্রকাশ ঘটেছে।

আপাতঃদৃষ্টিতে মন্দিরের দেওয়ালে ব্যাপকভাবে পোড়ামাটির চিত্র অলঙ্করণকারী লোকশিল্পীদের অনেকেই এসেছিলেন কৃষ্ণনগর থেকে। তারা তাদের পরিচিত পরিবেশের প্রভাব শিল্পকর্মে প্রতিফলিত করেছেন। প্যানেলে সূক্ষ্মভাবে চিত্রায়িত দেবতাগণের আদল কখনও কখনও বিস্ময়করভাবে তাদের সমাজের পরিচিত সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে মিলে গিয়েছিল। উদাহরণ হিসেবে পশ্চিমের সম্মুখভাগের নিচের দিকের প্যানেলের পোড়ামাটির অলঙ্করণগুলির কথা বলা যেতে পারে। এখানে কৃষ্ণ গাছ থেকে নারকেল পাড়ছিলেন এবং গাছের অর্ধেক পর্যন্ত আরোহণ করা তাঁর এক সঙ্গীর হাতে এটি তুলে দিচ্ছেন এবং নিচে অপেক্ষারত অন্য সঙ্গীর হাতে সে দিচ্ছিল নারকেলটি। এটি ছিল বাংলার একটি পরিচিত দৃশ্য। এখানে দেবতাকে এ সমাজের একজন পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে দেখানো হয়েছে। কতিপয় স্বতন্ত্র ফলক চিত্রও রয়েছে যেখানে স্বভাবিক বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ছিল। যেমন দক্ষিণ দিকে বারান্দার ভেতর দিকে একটি ফলক রয়েছে যেখানে রাধা-কৃষ্ণ একটি হাতির ওপর নৃত্য করছেন, একই সঙ্গে বেশ দক্ষতায় ডজন খানেক মানব মূর্তিও উৎর্কীণ করা হয়েছে। উত্তর দিকের দেওয়ালে কৃষ্ণ তাঁর একজন নবপরীণিতা স্ত্রীর সঙ্গে চাঁদোয়ার নিচে কটি পিঁড়িতে (নিচু করে তৈরী কাঠের আসন) বসেছেন। নববধু লাজনম্রভাবে অবগুন্ঠন দিয়ে আছেন এবং একহাত দিয়ে ধরে আছেন নিজের মাথা। তিনি চকিত দৃষ্টি দিচ্ছেন তাঁর প্রভুর দিকে। এটি বাংলার সুপরিচিত বিয়ের দৃশ্যের প্রতিফলন। কার্ণিসে অলংকৃত বিশৃঙ্খল জনতাদের মধ্যে হাঁটু ও পেছন দিক একটি গামছা পেঁচিয়ে (কাপড়ের টুকরো) হাঁটু ভাঁজ করে গুটিসুটি মেরে নির্লিপ্তভাবে বসে থাকা কৃষ্ণ, এমন দৃশ্যও কেউ খুঁজে পেতে পারেন। এ ভঙ্গি বাঙালিদের মধ্যে দেখা যায় না। তবে এ দৃশ্যের মিল পাওয়া যায় বিহারের শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে।

যাহোক, কান্তজীর মন্দিরের চমৎকার পোড়ামাটির অলঙ্করণের একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক হলো যে, এতে কামদ দৃশ্যাবলির চিত্র অঙ্কন করা হয়নি, যেমনটি দেখা যায় উড়িষ্যা ও দক্ষিণ ভারতীয় মন্দিরসমূহে।

কান্তজীর মন্দিরের দেওয়ালের ওপর পোড়ামাটির এ বিশাল অলঙ্করণ সে সময়ের জীব ও প্রাণশক্তিরই প্রকাশ ছিল এবং হাজার বছর ধরে বাংলাদেশের পলিময় মাটিতে লালিত শক্তির ভেতর থেকেই এ শিল্প বেড়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের মতো এমন ব্যাপক উর্বর পলিময় ভূমিতে পাথরের অভাব হেতু দেশীয় ধারায় পোড়ামাটি শিল্পের বিকাশ যৌক্তিক কারণেই ঘটেছিল। আদি ঐতিহাসিক যুগে, বিশেষ করে পাল চন্দ্র বংশের আমলে যখন পাহাড়পুর, ময়নামতী, ভাসু বিহার এবং সিতাকোটে বৌদ্ধ মন্দির এবং অন্যান্য ইমারতসমূহ লতা-পাতা ও পোড়ামাটির মূর্তি দিয়ে প্রাণবন্ত ছিল, তখন থেকেই এ রুপকারক শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। এ সমস্ত পোড়ামাটির ফলক ছিল বড় আকৃতির এবং কিছুটা সেকেলে ধরণের। কিন্তু কান্তনগর মন্দিরের দেওয়াল সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। শিল্পীগণ অত্যন্ত উচ্চমানের পরিশীলিত এবং পরিণত শিল্পের বিকাশ ঘটিয়েছিলেন, যেখানে সমন্বিত ধারায় অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে অলঙ্করণ করা হয়েছিল। বিচ্ছিন্ন ধারায় প্রাচীন শিল্প ঐতিহ্যের বিপরীতে এবং কিছুটা অসংলগ্ন বিন্যাসে এ মন্দিরের শিল্পের সমন্বয় ঘটেছিল বেশ কিছু স্বতন্ত্র ফলকে এবং বিস্তৃতভাবে শিল্প প্রকরণের যে সমন্বিত রুপের প্রকাশ ঘটেছিল তার মধ্যে এক ধরণের ছন্দ লক্ষ করা যায়। এরই প্রভাবে কার্পেট ও অন্যান্য সূচী শিল্পে এ ঐশ্বর্যশালী অলঙ্করনের ব্যবহার প্রায়শই লক্ষ্য করা যায়।

কিভাবে যাওয়া যায়:

দিনাজপুর শহর থেকে প্রায় ১২ মাইল উত্তরে এবং দিনাজপুর-তেতঁলিয়া সড়কের প্রায় এক মাইল পশ্চিমে ঢেপা নদীর পারে এক শান্ত নিভৃতগ্রাম কান্তনগরে এ মন্দিরটি স্থাপিত।

দিনাজপুরশহর থেকে ৫২ কিমি দক্ষিণে নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ১৫০ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে নান্দনিক সৌন্দর্যের এক স্বপ্নিল বিনোদন জগত স্বপ্নপুরী।



দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

 স্বপ্নপুরী

স্বপ্নপুরীর প্রবেশমুখে স্থাপিত প্রস্তরনির্মীত ধবধবে সাদা ডানাবিশিষ্ট দুটি সুবিশালপরী যেন মোহনীয় ভঙ্গীতে পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। স্বপ্নপুরী হচ্ছে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিনোদনকেন্দ্র। এখানে রয়েছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পশু-পাখির অবিকল ভাষ্কর্য, কৃত্রিম পাহাড়, কৃত্রিম ঝর্ণা এবং ইট-সিমেন্টে নির্মিত বাংলাদেশের এক সুবিশাল মানচিত্রের সমন্বয়ে তৈরী একটি কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, জীবন্ত পশুপাখীদের চিড়িয়াখানা, শিশুদের জন্য পার্ক, দোলনা, বায়োস্কোপ ইত্যাদি।

 

স্বপ্নপুরীর আরো আকর্ষণ  সারিসারি সবুজ দেবদারু গাছের মনোলোভা সৌন্দর্য আর বিস্তীর্ণ ঝিলের তীরে ফুটন্ত গোলাপ বাগানের মাঝখানে স্থাপিত অপরূপ সুন্দর “নিশিপদ্ম”। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য আরো রয়েছে বিশাল দিঘিতে স্পিডবোট ও ময়ূরপঙ্খীনাও, দুই ঘোড়া চালিত টমটম, হরেক রকম সুগন্ধ ও সৌন্দর্য এবং স্বচ্ছ পানির ফোয়ারাবিশিষ্ট কয়েকটি ফুল বাগান এবং বিশ্রামের জন্য আকর্ষণীয় রেষ্ট হাউস ও ডাক বাংলোসহ বিনোদনের আরো অনেক উপকরণ।


দিনাজপুরশহর থেকে ৫২ কিমি দক্ষিণে নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ১৫০ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে নান্দনিক সৌন্দর্যের এক স্বপ্নিল বিনোদন জগত স্বপ্নপুরী।

 

স্বপ্নপুরীর প্রবেশমুখে স্থাপিত প্রস্তরনির্মীত ধবধবে সাদা ডানাবিশিষ্ট দুটি সুবিশালপরী যেন মোহনীয় ভঙ্গীতে পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। স্বপ্নপুরী হচ্ছে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিনোদনকেন্দ্র। এখানে রয়েছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পশু-পাখির অবিকল ভাষ্কর্য, কৃত্রিম পাহাড়, কৃত্রিম ঝর্ণা এবং ইট-সিমেন্টে নির্মিত বাংলাদেশের এক সুবিশাল মানচিত্রের সমন্বয়ে তৈরী একটি কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, জীবন্ত পশুপাখীদের চিড়িয়াখানা, শিশুদের জন্য পার্ক, দোলনা, বায়োস্কোপ ইত্যাদি।

 

স্বপ্নপুরীর আরো আকর্ষণ  সারিসারি সবুজ দেবদারু গাছের মনোলোভা সৌন্দর্য আর বিস্তীর্ণ ঝিলের তীরে ফুটন্ত গোলাপ বাগানের মাঝখানে স্থাপিত অপরূপ সুন্দর “নিশিপদ্ম”। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য আরো রয়েছে বিশাল দিঘিতে স্পিডবোট ও ময়ূরপঙ্খীনাও, দুই ঘোড়া চালিত টমটম, হরেক রকম সুগন্ধ ও সৌন্দর্য এবং স্বচ্ছ পানির ফোয়ারাবিশিষ্ট কয়েকটি ফুল বাগান এবং বিশ্রামের জন্য আকর্ষণীয় রেষ্ট হাউস ও ডাক বাংলোসহ বিনোদনের আরো অনেক উপকরণ।

কিভাবে যাওয়া যায়:HOW TO GO

দিনাজপুর শহর থেকে ৫২ কিমি দক্ষিণে নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে স্বপ্নপুরী অবস্থিত। বাসযোগে যাওয়া যেতে পারে অথবা রেলযোগে ফুলবাড়ী রেল স্টেশনে নেমে অটোরিক্সায় যাওয়া যায়।



দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজবাড়ী

১৬০৮ হতে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত রাজবাড়ীটি ছিল বৃহৎ দিনাজপুর জেলার ঐশ্বর্যের প্রতীক। শুরুর দিকে রাজবাড়ীর অবয়ব এমন না থাকলেও ধীরে ধীরে রাজবাড়ী গড়ে ওঠে তিলোত্তমা হিসেবে। ১৯৫১সালে জমিদারী অধিগ্রহণ এবং প্রজাস্বত্ব আইন বাস্তবায়নের ফলে জমিদারী প্রথার উচ্ছেদ হয়।তখন হতে রাজবাড়ীটি পরিত্যাক্ত হতে শুরু করে। সর্বশেষ জমিদার জগদীশনাথ ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কলকাতায় মৃত্যু বরণ করেন। জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের পর হতে রাজবাড়ীর জৌলুস কমতে থাকে। এটি বর্তমানে বিলুপ্ত জমিদারী কীর্তির ধ্বংসাবশেষ মাত্র। রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থাপনাসমূহ হলোঃ

আয়নামহল, রাণী মহল, কুমার মহল, আটচালা ঘর, লক্ষ্মী ঘর, আতুর ঘর, রাণী পুকুর, চাঁপা তলার দিঘী, ঠাকুর বাড়ী, কালীয়া জিউ মন্দির।


১৬০৮ হতে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত রাজবাড়ীটি ছিল বৃহৎ দিনাজপুর জেলার ঐশ্বর্যের প্রতীক। শুরুর দিকে রাজবাড়ীর অবয়ব এমন না থাকলেও ধীরে ধীরে রাজবাড়ী গড়ে ওঠে তিলোত্তমা হিসেবে। ১৯৫১সালে জমিদারী অধিগ্রহণ এবং প্রজাস্বত্ব আইন বাস্তবায়নের ফলে জমিদারী প্রথার উচ্ছেদ হয়।তখন হতে রাজবাড়ীটি পরিত্যাক্ত হতে শুরু করে। সর্বশেষ জমিদার জগদীশনাথ ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কলকাতায় মৃত্যু বরণ করেন। জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের পর হতে রাজবাড়ীর জৌলুস কমতে থাকে। এটি বর্তমানে বিলুপ্ত জমিদারী কীর্তির ধ্বংসাবশেষ মাত্র। রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থাপনাসমূহ হলোঃ

আয়নামহল, রাণী মহল, কুমার মহল, আটচালা ঘর, লক্ষ্মী ঘর, আতুর ঘর, রাণী পুকুর, চাঁপা তলার দিঘী, ঠাকুর বাড়ী, কালীয়া জিউ মন্দির।

কিভাবে যাওয়া যায়: HOW TO GO

দিনাজপুর রাজবাড়ী দিনাজপুর শহরের উত্তর-পশ্চিম দিকে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড মোড় হতে পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁওগামী মহাসড়কের চিরিরবন্দর সংযোগ সড়কের মোড় হতে ১ কিঃমিঃ অটোরিকশা যোগে।



দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ Beautiful  Heritage places of DINAJPUR DISTRICT

রাম সাগর

দিনাজপুর শহরের কেন্দ্রথেকে ৮কিমি দক্ষিণে আউলিয়াপুর ইউনিয়নে অবস্থিত দিনাজপুরের মহারাজদের অন্যতম কীর্তি রামসাগরদিঘি। এর চারদিকে সবুজ প্রান্তর। ধূসর ছোট ছোট মাটির টিলারপাড় দ্বারা বেষ্টিত গ্রামীণ উদাস প্রকৃতির মধ্যে একখন্ড লাল গৈরিকও স্ফীতিময়খিয়ার মাটির উপর এক অপরূপ মনোমুগ্ধকর পরিবেশে এই সাগরোপমদিঘী অবস্থিত।পাড়ভূমি সহ দিঘির মোট আয়তন ৪,৩৭,৪৯২ বর্গমিটার। জলভাগের দৈর্ঘ্য ১০৩১ মিটার, প্রস্থ ৩৬৪মিটার। গভীরতা গড়ে প্রায় ৯ মিটার। সর্বোচ্চ পাড়ের উচ্চতা প্রায় ১৩.৫০মিটার। সেচ সুবিধা, প্রজাদের পানির কষ্টদূরীকরণ এবং দূর্ভিক্ষ পীড়িত প্রজাদের কাজের বিনিময়ে খাদ্যের সংস্থান হিসেবেই রাজা রামনাথের আমলে এ দিঘি খনন করা হয়।তার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।দিঘিটি খনন করতে তৎকালীন প্রায় ৩০,০০০টাকা এবং ১৫লক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়েছিল। দিঘির পাড়ের উচ্চ টিলার উপর অবস্থিত মনোরম বাংলোটিদেশী-বিদেশী অসংখ্য কৌতূহলী পর্যটকের নিকট যেমন প্রতিনিয়ত স্বপ্নিল আকর্ষণ, তেমনটি প্রমোদবিহারীদের জন্য নিভৃত নিকেতনও বটে।

দিনাজপুর শহরের কেন্দ্রথেকে ৮কিমি দক্ষিণে আউলিয়াপুর ইউনিয়নে অবস্থিত দিনাজপুরের মহারাজদের অন্যতম কীর্তি রামসাগরদিঘি। এর চারদিকে সবুজ প্রান্তর। ধূসর ছোট ছোট মাটির টিলারপাড় দ্বারা বেষ্টিত গ্রামীণ উদাস প্রকৃতির মধ্যে একখন্ড লাল গৈরিকও স্ফীতিময়খিয়ার মাটির উপর এক অপরূপ মনোমুগ্ধকর পরিবেশে এই সাগরোপমদিঘী অবস্থিত।পাড়ভূমি সহ দিঘির মোট আয়তন ৪,৩৭,৪৯২ বর্গমিটার। জলভাগের দৈর্ঘ্য ১০৩১ মিটার, প্রস্থ ৩৬৪মিটার। গভীরতা গড়ে প্রায় ৯ মিটার। সর্বোচ্চ পাড়ের উচ্চতা প্রায় ১৩.৫০মিটার। সেচ সুবিধা, প্রজাদের পানির কষ্টদূরীকরণ এবং দূর্ভিক্ষ পীড়িত প্রজাদের কাজের বিনিময়ে খাদ্যের সংস্থান হিসেবেই রাজা রামনাথের আমলে এ দিঘি খনন করা হয়।তার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।দিঘিটি খনন করতে তৎকালীন প্রায় ৩০,০০০টাকা এবং ১৫লক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়েছিল। দিঘির পাড়ের উচ্চ টিলার উপর অবস্থিত মনোরম বাংলোটিদেশী-বিদেশী অসংখ্য কৌতূহলী পর্যটকের নিকট যেমন প্রতিনিয়ত স্বপ্নিল আকর্ষণ, তেমনটি প্রমোদবিহারীদের জন্য নিভৃত নিকেতনও বটে।

কিভাবে যাওয়া যায়:

দিনাজপুর সদর থেকে অটো/রিক্সা যোগে।



দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ Beautiful  Heritage places of DINAJPUR

সুখ সাগর ইকোপার্ক

অবস্থান: দিনাজপুর শহর হতে উত্তর পূর্ব দিকে  ২ কিলোমিটার দূরে রাজবাটী এলাকায় অবস্থিত।

আয়তন: সুখসাগর আয়তন ২২.৪৪ একর।

অর্থ উৎস: বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

প্রকল্পের নাম: সুখসাগর ট্যুরিজম ইকোপার্ক নির্মাণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্প।

ব্যয়: ১,৪৮,৫২,০০০/- (এক কোটি আটচল্লিশ লক্ষ বাহান্ন হাজার) টাকা।

উদ্দেশ্য: প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে দিনাজপুর সদর উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলা জনসাধারণের ভ্রমণের জন্য পিকনিক ও ট্যুরিস্ট স্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সুখসাগর ইকোপার্কটিতে পাখির অভয়াশ্রম তৈরি করা হয়েছে  যা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তথা পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে।



কিভাবে যাওয়া যায়:HOW TO GO

দিনাজপুর শহর হতে উত্তর পূর্ব দিকে ২ কিলোমিটার দূরে রাজবাটী এলাকায় অবস্থিত।

Previous Post
Next Post
Related Posts