সিরাজগঞ্জের পর্যটন ও ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থান সমূহ

  স িরাজগঞ্জের পর্যটন ও ঐতিহ্য পর্যটন  দর্শনীয় স্থান সমূহ সিরাজগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বাঘাবাড়ী নদী বন্দর, হার্ড পয়েন্ট, ছয়...

 


িরাজগঞ্জের পর্যটন ও ঐতিহ্য

পর্যটন 

দর্শনীয় স্থান সমূহ

সিরাজগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বাঘাবাড়ী নদী বন্দর, হার্ড পয়েন্ট, ছয়আনি পাড়া দুই গম্বুজ মসজিদ, নবরত্ন মন্দির,জয় সাগরদিঘী, শাহাদাত পুর মসজিদ, ইলিয়ট ব্রিজ, চলনবিল, মখদুম শাহের মাজার, যমুনা বহুমুখী সেতু, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাধ ইত্যাদি।

 

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় যমুনা সেতু, হার্ডপয়েন্ট, রাণীগ্রাম গ্রোয়েন, কাঁটাখাল, ইলিয়ট ব্রীজ, যমুনা সেতুর (বাংলাদেশের বৃহত্তম সড়ক ও রেলসেতু) পাশাপাশি সয়দাবাদ ইউনিয়নে যমুনা ব্রীজ সংলগ্ন একটি ‘ইকোপার্ক’ প্রতিষ্ঠা করা হলেও জনগণেরচাহিদানুযায়ী এখনও গড়ে উঠেনি। পরিপূর্ণভাবে গড়ে উঠলে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের ব্যাপক সমাগম ঘটবে মর্মে আশা করা যায়। এছাড়া পৌর এলাকার হার্ডপয়েন্টে একটি পার্ক তৈরী করা হয়েছে। আবাসনের জন্য ইতোমধ্যেই শহর এলাকায় গড়ে উঠেছে দু’তিনটি উন্নতমানের আবাসিক হোটেল।উল্লাপাড়ারঘাটিনা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিন বিকেলে আনন্দ ভ্রমনের জন্য লোকজন জড়ো হয়। এছাড়া বর্ষাকালে চলনবিল বেষ্টিত মোহনপুর, উধুনিয়া, বড়পাঙ্গাসী ও বাঙ্গালা ইউনিয়নের বিস্তির্ণ অঞ্চল নয়নাভিরাম শোভা ধারণ করে।সুফি সাধক শাহ কামাল (রহঃ) ধর্ম প্রচারের জন্য কামারখন্দে আসেন এবং তিনি ভদ্রঘাট ইউনিয়নের নান্দিনা কামালিয়া গ্রামে মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর কবরকে ঘিরে তৈরী হয়েছে মাজার শরীফ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ মাজার দর্শনে আসেন।সিরাজগঞ্জের উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থানগুলো হলোঃ

 

 

হার্ডপয়েন্ট- 

দর্শনীয় স্থান

সিরাজগঞ্জ জেলা যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রতি বছর যমুনার অব্যহত ভাঙ্গনের ফলে শহরটি ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে স্থানান্তরিত হয়। প্রতি বছরের ভাঙ্গনের ফলে সরকার ১৯৯৬ সালে ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাধ নির্মাণ করেন। ফলে বর্তমানে শহর যমুনা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে অনেকটা নিরাপদ হয়েছে। সেই সাথে অভাবিত ভাবে এই হার্ডপয়েন্টটি একটি পর্যটনের স্থান হিসেবে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে।


প্রতি দিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু ভ্রমণ পিপাসু মানুষ এই স্থানটি ভ্রমণ করে থাকেন। বর্ষামৌসুমে এই স্থানটি খুবই আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।এখানে দাঁড়ালে যমুনা নদীর পূর্ণরূপ পর্যবেক্ষণ করা যায়। তাছাড়া এখান থেকে যমুনা বহুমূখী সেতুর নান্দনিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

 

 

বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমূখী সেতুঃ

দর্শনীয় স্থান 

 

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম এবং বিশ্বের ১১তম দীর্ঘ সেতুএটি। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে এটি উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশের ৩টি বড় নদীর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম এবং পানি নির্গমনের দিক থেকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম নদী যমুনার উপর এটি নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর নামানুসারে সেতুটির নামকরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের পুর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে। এই সেতু নির্মাণের ফলে জনগণ বহুভাবে লাভবান হচ্ছে এবং এটি আন্তঃআঞ্চলিক ব্যবসায় ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণঅবদান রাখছে। সড়ক ও রেলপথে দ্রুত যাত্রী ও মালামাল পরিবহন ছাড়াও এই সেতু বিদ্যুৎ ও প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চালন এবং টেলিযোগাযোগ সমন্বিত করার অপুর্ব সুযোগ করে দিয়েছে। টাঙ্গাইল থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেতু এশীয় মহাসড়ক ও আন্তঃএশীয় রেলপথের উপর অবস্থিত। এ দুটি সংযোগপথের কাজ শেষ হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন আর্ন্তজাতিক সড়ক ও রেলসংযোগ স্থাপিত হয়।


সেতুটি নির্মাণে মোট খরচ হয় ৯৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইডিএ, জাপানের ওইসিএফ প্রত্যেকে ২২ শতাংশ পরিমাণ তহবিল সরবরাহ করে এবং বাকি ৩৪ শতাংশ ব্যয় বহন করে বাংলাদেশ। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিঃ মিঃ এবং প্রস্থ ১৮.৫ মিঃ।

 

 

যমুনা নদীর প্রধান চ্যানেলের প্রস্থ ৩.৫ কিলোমিটারের বেশি নয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে এবং বন্যাজনিত কারণের জন্য আরও কিছুটা প্রশ্বস্ততা বাড়িয়ে ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু যথেষ্ট বলে বিবেচনা করা হয়। ভৌত অবকাঠামোর কাজ শুরু করার এক বছর পর ১৯৯৫ সালের অক্টোবর মাসে সেতুটির মূল অংশ ৪.৮ কিরোমিটার ধরে চূড়ান্ত প্রকল্প অনুমোদিত হয়।

 

যদিও বন্যায় নদী ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হয়ে থাকে, সার্বিক প্রকল্প ব্যয় অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক অবস্থায় রাখার জন্য উক্ত সংকোচন অত্যাবশক বিবেচনা করা হয়। এ জন্য অবশ্য নদীর প্রবাহ সেতুর নিচ দিয়ে সীমাবদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যে নদী শাসনের প্রয়োজন দেখা দেয়।

 

 

সম্ভাব্য দৈব দুর্বিপাক ও ভুমিকম্প যাতে সহ্য করতে পারে সেজন্য সেতুটিকে ৮০-৮৫ মিটার লম্বা এবং ২.৫ ও ৩.১৫ মিটার ব্যাসের ১২১টি ইস্পাতের খুঁটির উপর বসানো হয়েছে। এই খুঁটিগুলি খুবই শক্তিশালী (২৪০টন) হাইড্রোলিক হাতুড়ি দ্বারা বসানো হয়। সেতুটিতে স্প্যানের সংখ্যা ৪৯ এবং ডেক খন্ডের সংখ্যা ১,২৬৩। সেতুটির উপর দিয়ে ৪ লেনের সড়ক এবং ২টি রেলট্র্যাক নেওয়া হয়েছে। সেতুটির উপরিকাঠামো ঢালাই করা খন্ডাংশ দিয়ে তৈরি এবং এগুলি সুস্থিত খিলান পদ্ধতিতে বসানো হয়েছে। সেতুটি নির্মাণে সর্বমোট যে ব্যয় হয় মিলিয়ন ডলারে তার বিভাজন হচ্ছে; সেতু এবং তার উপরে তৈরি পথসমূহ-২৬৯, নদীশাসন-৩২৩, রাস্তা ও বাঁধসমূহ-৭১, উপদেষ্টা- ৩৩, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ -৬৭, সংস্থাপন-১৩, এবং অন্যান্য ১৮৬।

 

 

উপমহাদেশের এই অংশের জনগণ সর্বদাই বিশাল যমুনা নদীর উপর দিয়ে সেতু স্থাপনের মাধ্যমে গোটা দেশের সঙ্গে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সমন্বয়ের আকাঙ্খা পোষণ করে এসেছে। ১৯৪৯ সালে জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রথম রাজনৈতিকপর্যায়ে যমুনা সেতু নির্মাণের দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক নির্বাচনের সময় যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহারে এই সেতু নির্মাণের কথা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬৪ সালের ৬ জানুয়ারী রংপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুর রহমান যমুনা নদীর উপর সরকারের সেতু নির্মাণের কোন ইচ্ছা আছে কি-না জানতে চেয়ে প্রাদেশিক পরিষদে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। ১৯৬৬ সালের ১১ জুলাই রংপুর থেকে একই পরিষদের আরেকজন সদস্য শামসুল হক এই সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করেন এবং এটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

 

 

১৯৬৯ সালে যুক্তরাজ্যের ফ্রিমান ফক্স অ্যান্ড পার্টনার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটির প্রাথমিক সম্ভাব্যতা নিয়ে সমীক্ষা পরিচালনা করে। তারা সিরাজগঞ্জের নিকট আনুমানিক ১৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে একটি রেল-কাম-সড়কসেতু নির্মাণের সুপারিশ করেন। এই সমীক্ষা ছিল প্রাথমিক ধরনের এবং তারা বিস্তারিত সমীক্ষা পরিচালনার সুপারিশ করেন। অন্যদিকে ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে বেতার-টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণদানকালে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমান তাঁর দলের নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে যমুনা সেতু নির্মাণের কথা উত্থাপন করেন।এ সকল প্রচেষ্টা তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মুক্তিযুদ্ধের কারণে বাস্তবায়িত হতে পারে নি। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭২ সালে যমুনা নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় এবং ১৯৭২-৭৩ সালের বাজেটে এজন্য বরাদ্দ রাখা হয়।

 

বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে জাপান আর্ন্তজাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ১৯৭৩ সালে যমুনা নদীর উপর একটি সড়ক-কাম-রেলসেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা-সমীক্ষা হাতে নেয়। ১৯৭৬ সালে জাপান তাদের সমীক্ষা শেষ করে। তারা বলে যে যমুনা প্রকল্পে ৬৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে এবং এর অর্থনৈতিক আগমের হার মাত্র ২.৬ শতাংশ। যেহেতু এটা প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভজনক নয়, তৎকালীন সরকার প্রকল্পটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। ১৯৮২ সালে সরকার যমুনা সেতু প্রকল্প পুনরুজ্জীবিত করে। এ সময় সরকার যমুনার ওপারে পশ্চিমাঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চালনের সম্ভাব্যতাযাচাইয়ের জন্য একটি সমীক্ষা দল নিয়োগ করে। সমীক্ষার উপসংহারে বলা হয় যে, শুধু গ্যাস সংযোগ অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে না। উপদেষ্টাগণ একটি সড়ক-কাম-গ্যাস পরিবাহক সেতুর প্রকৌশলগত সম্ভাব্যতা ও এর ব্যয় নির্ধারণ করেন। এভাবেই বহুমুখী সেতু নির্মাণের প্রাথমিক ধারণার উৎপত্তি হয়। তিন লেন বিশিষ্ট ১২ কিঃ মিঃ দীর্ঘ সেতুর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মন্ত্রিসভা এই রিপোর্ট অনুমোদন করে এবং এই প্রকল্পের অনুকূলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

 

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৯৮৫ সারের ৩ জুলাইরাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ বলে যমুনা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যমুনা সেতু সারচার্জ ও লেভি আদায়ের জন্য আরেকটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশটির বিলুপ্তি পর্যন্ত এই প্রক্রিয়ায় ৫.০৮ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহ করা হয়। ১৯৮৬ সালে এই সেতুর জন্য প্রথম পর্যায়ের সম্ভাব্যতা-সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এ সময় সিরাজগঞ্জ ও ভূয়াপুর (টাঙ্গাইল) মর্ধবর্তী স্থানকে সেতুর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান বলে চিহ্নিত করা হয়। ১৯৮৭ সালের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের সম্ভাব্যতা-সমীক্ষা পরিচালিত হয়। এতে দেখা যায় যে একটি সড়ক-কাম-রেল-বিদ্যুৎ-গ্যাস লাইন পরিবাহী সেতু অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উভয় দিক থেকেই লাভজনক হবে। ১৯৯২ সালে আইডিএ, এডিবি ও জাপানের ওইসিএফ সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নে সম্মত হয়। নির্মাণ চুক্তির জন্য ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক বিডিং এর মাধ্যমে দরপত্র আহবান করা হয়। সেতু নির্মাণ, নদী শাসনের কাজ এবং দুটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজের চুক্তি ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে সম্পাদিত হয়। ১৯৯৪ সালের ১০ এপ্রিল সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়। ১৯৯৪ সারের ১৫ অক্টোবর প্রকল্পের ভৌত নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন শুরু হয় এবং গ্যাস সঞ্চালন লাইন ব্যতীত সকল কাজ ১৯৯৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ হয়। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন সেতুটি চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা হয়।


বাংলার আউলিয়া-দরবেশের মধ্যে মখদুম শাহ খুবই পরিচিতি ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে পুরানো শাহী মসজিদের পাশ্ববর্তী কবরস্থানে তিনি শায়িতআছেন। স্থাপত্য রীতির বিবেচনায় বলা যায় যে, শাহজাদপুর মসজিদটি মুঘলপূর্ব যুগে নির্মিত।মসজিদটির গাত্রে কোন অভিলেখ না থাকায় এর নির্মাণ তারিখ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। এ কারণে এবং লিখিত সাক্ষ্যের অনুপস্থিতিতে দরবেশ মখদুম শাহ এর পরিচিতি ও ইতিহাস সঠিক ভিত্তিরউপর দাঁড় করানো সম্ভব নয়। এতদঞ্চলে প্রচলিত জনশ্রুতিই মখদুম শাহ সমন্ধে জানার একমাত্র উৎস। প্রায় একশত বছর পূর্বে এ কাহিনী সংগ্রহ করে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী ইয়েমেনের জনৈক রাজা মুয়াজ বিন জবলের এক কন্যা ও দুই পুত্রের একজন ছিলেন মখদুম শাহ দৌলাহ। পিতার অনুমতি নিয়ে তিনি নিজে এবং আরও বারোজন আউলিয়াসহ বিধর্মীদের দেশে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বের হন। এছাড়া স্বীয় বোন এবং খাজা কালাম দানিশমন্দ, খাজা নুর ও খাজা আনোয়ার নামে তাঁর তিন ভাগনে তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন। পথিমধ্যে বোখারাত শেক জালালুদ্দীন বোখারীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। শুভেচ্ছার নিদর্শন স্বরূপ তিনি মখদুম শাহকে ধুসর রঙের এক জোড়া কবুতর উপহার দেন। বোখারা থেকে দলটি বাংলা অভিমুখে যাত্রা করে। তিনি দলবলসহ বাংলায় এসে জনৈক হিন্দু রাজার শাসনাধীন শাহজাদপুর নামক লোকালয়ে বসবাস শুরু করেন। ঐ রাজার রাজ্য বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মখদুম শাহ ও তাঁর অনুসারীদের উৎখাত করার জন্য রাজা আদেশ দেন। ফলে দু’দলের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে খাজা নুর ব্যতীত মখদুম শাহ ও তাঁর অন্যান্য সাথী শাহাদত বরণ করেন। এ বিষাদময় ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেয়ে পরবর্তী সময়ে খাজা নুর সোনারগাঁও এর এক রাজকুমারীকে বিয়ে করেন। শাহজাদপুর পরিবার যারা মখদুম শাহ দৌলার বংশ বলে দাবি করে আসছে, তারা সম্ভবত খাজা নুর ও সোনাগাঁয়ের রাজকুমারীর বংশধর।

মখদুম শাহ দৌলাহ যে পরিবেষ্টিত প্রাঙ্গণে শায়িত আছেন ঠিক সেখানে শাহ ইউসুখের সামাধি সৌধ অবস্থিত। মখদুম শাহের অন্যান্য অনুসারীদের পাশে একটি আঙ্গিনায় কবর দেওয়া হয়। শামসুদ্দীন তাব্রিজিকে (প্রখ্যাত ‘মসনভি’ রচয়িতা মেশ জালালুদ্দীন রুমির শিক্ষক শামসুদ্দীন তাব্রিজি নন। তিনি কখনও বাংলায় এসেছেন বলে জানা যায় না)শাহ দৌলাহ শহীদের অনুসারী বলে ধরা হয়। পৃথক অন্য একটি আঙ্গিনায় শামসুদ্দীন তাব্রিজি শায়িত আছেন। অন্যান্যরা যাঁদেরকে মখদুম শাহীর অনুসারি ধরা হয় এবং যাঁদের সমাধি একই অঙ্গিনায় অবস্থিত তাঁরা হলেন শাহ খিনগার, শাহ আজমল, হাসিল পীর , শাহ বোদলা, শাহ আহমদ এবং শাহ মাহমুদ। তাঁর অন্যান্য কিছু সহচরদের গণকবর দেওয়া হয় এবং তা গঞ্জ-ই-শাহীদান নামে পরিচিত। মখদুম শাহের বোন নিকটবর্তী নদীতে ঝাপ দিয়ে আত্নহত্যা করেন এবং ঐ জায়গাটি এখনও ‘সতীবিবির ঘাট’ নামে পরিচিত। যেহেতু মখদুম শাহ ইয়েমেনের রাজ্যের শাহজাদা নামে পরিচিত, তাই তাঁর নামানুসারে স্থানাটির নামকরণ করা হয় শাহজাদপুর। মুসলিম আমলে শাহজাদপুর পরগনা ইউসুফশাহীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইউসুফ শাহ এর নামানুসারে এ পরগনার নামকরণ করা হয়। ৭২২ বিঘা জমি নিয়ে একটি বিরাট এস্টেট শাহজাদপুর দরগাহ ও মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দান করা হয়। এ এস্টেট এখনও মখদুম শাহের ভাগনে খাজা নুরের বংশধরেরা ভোগ-দখল করছেন। মখদুম শাহ দৌলাহর বাংলায় আগমনের তারিখ নির্ণয় করা যায়নি। প্রচলিত কাহিনী অনুসারে, তুর্কি আক্রমনের পূর্বে দ্বাদশ শতাব্দীতে তিনি এবং তাঁর সহচরগণ বাংলায় আসেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। অবশ্য আধুনিক পন্ডিতগণ এ ধারণার ব্যাপারে সন্দিহান । ইয়েমেনের সুলতান মুয়াজ বিন জবলকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এক মুয়াজ বিন জবল নবী হযরত মুহম্মদ (সঃ)-এর সাহাবি ছিলেন। তিনি ১৭ বা ১৮ হিজরিতে মারা যান। তাই নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, লোককাহিনীর মুয়াজ এবং মুহম্মদ (সঃ)-এর সাহাবি মুয়াজ কোনক্রমেই অভিন্ন ব্যক্তি নন। জালালউদ্দিন বোখারী, যাঁর সঙ্গে মখদুম শাহের দেখা হয়েছিল বলা হয় তিনি ১২৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। অতএব, এ ব্যাপারে কালের পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করা হয় যে, মখদুম শাহ চতুর্দশ শতাব্দীর পূর্বে বাংলায় আসেননি এবং নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, বখতিয়ারের বাংলা বিজয়ের পর তিনি এদেশে আসেন। শাহজাদপুর দরগাহে প্রতি বছর চৈত্র মাসে (মধ্য-এপ্রিল) এক মাসব্যাপী মেলা হয়। মেলার সময় এখানে সকল সম্প্রদায়ের লোকের সমাগম হয়। দরগায় উৎসর্গীকৃত সামগ্রীর মধ্যে চাল, চিনি, মিষ্টি, মোরগ এবং চেরাগ (এক ধরণের ব্রতমূলক বাতি) প্রধান।


রবীন্দ্র-কাচারিবাড়ি 

দর্শনীয় স্থান  

শাহজাদপুরের আর একটি বিখ্যাত ও জনপ্রিয় পুরাকীর্তি হচ্ছে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ী। এটি রবীন্দ্রনাথের পৈতৃক জমিদারি তত্ত্বাবধানের কাচারি ছিল। তারও পূর্বে অষ্টাদশ শতাব্দীতে এটি নীলকরদের নীলকুঠি ছিল। সে কারনে এখনও অনেকে একে কুঠিবাড়ী বলে। পরে রবীন্দ্রনাথের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর এটি নিলামে কিনে নেন। এখানে রয়েছে জমিদারির খাজনা আদায়ের কাচারির একটি ধ্বংসাবশেষ, একটি বেশ বড় দ্বিতল ভবন। বর্তমানে এখানে নির্মিত হয়েছে একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম। দ্বিতল ভবনটি বর্তমানে রবীন্দ্র জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং আঙ্গিনার বিস্তৃত জায়গা জুড়ে তৈরী করা হয়েছে সুদৃশ্য একটি ফুলবাগান। রবীন্দ্রনাথ পিতার আদেশে ঊনত্রিশ বছর বয়সে ১৮৯০ সালে জমিদারি তত্ত্বাবধানের জন্য প্রথম শাহজদাপুর আসেন। রবীন্দ্রনাথ এখানকার প্রকৃতি ও মানুষের বিচিত্র জীবন প্রবাহের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হন। এখানে

এসে তার লেখা একটি কবিতায় তিনি বলেছেন,

 

‘‘নদী ভরা কূলে কূলে, ক্ষেত ভরা ধান।

আমি ভাবিতেছি বসে কি গাহিব গান।

কেতকী জলের ধারে

ফুটিয়াছে ঝোপে ঝাড়ে,

নিরাকুল ফুলভারে বকুল-বাগান।

কানায় কানায় পূর্ণ আমার পরাণ’’

(ভরা ভাদরে- সোনার তরী)

 

রবীন্দ্রনাথ ১৮৯০ থেকে ১৮৯৬ মোট ৭ বছর জমিদারির কাজে শাহজাদপুরে আসা-যাওয়া এবং অবস্থান করেছেন।তার এই শাহজাদপুরে আসা-যাওয়া শুধু জমিদারি তত্ত্বাবধানের বস্তুনিষ্ঠ প্রয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বরং এই জমিদারির প্রয়োজনকে ছাপিয়ে প্রাধান্য পেয়েছে কবির সাহিত্য সৃষ্টির অনুপ্রেরণা ও সৃজনশীলতা। এই সময়ের মধ্যে এখানে তিনি তাঁর অনেক অসাধারণ কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। এর মধ্যে ‘সোনার তরী’ কাব্যের ‘ভরা ভাদরে’, ‘দুইপাখি’ ‘আকাশের চাঁদ’, ‘হৃদয় যমুনা’, ‘প্রত্যাখ্যান’, ‘বৈষ্ণব কবিতা’, ‘পুরস্কার’ ইত্যাদি অসাধারণ কবিতা রচনা করেছেন। ‘চৈতালী’ কাব্যের ‘নদীযাত্রা’, ‘শুশ্রূষা’,‘ইছামতি নদী’, ‘বিদায়’, ‘আশিস-গ্রহণ’ ইত্যাদি কবিতা এবং ‘কল্পনা’ কাব্যের ‘যাচনা’, , ‘বিদায়’, ‘নরবিরহ’, ‘মানস-প্রতিমা’, ‘লজ্জিতা’, ‘সংকোচ’, ইত্যাদি বিখ্যাত গান রচনা করেছেন। তাঁর শাহজাদপুরে রচিত ছোটগল্পের মধ্যে ‘পোষ্টমাস্টার’, ‘ছুটি’, ‘সমাপ্তি’, ‘অতিথি’ ইত্যাদি বিখ্যাত। আর প্রবন্ধের মধ্যে ‘ছেলে ভুলানো ছড়া’, ‘পঞ্চভূত’, এর অংশবিশেষ এবং ‘ছিন্নপত্র’ ও ছিন্নপত্রাবলীর আটত্রিশটি পত্র রচনা করেছেন। এছাড়া তার ‘বিসর্জন’ নাটকও এখানে রচিত। সবচেয়েবড় কথা, তার পরবর্তী সাহিত্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে শাহজাদপুরের প্রভাব বিশেষভাবে বিদ্যমান।

 

ঠাকুর পরিবারে জমিদারি ভাগাভাগির ফলে শাহজাদপুরের জমিদারি চলে যায় রবীন্দ্রনাথের অন্য শরীকদের হাতে। তাই ১৮৯৬ সালে তিনি শেষ বারের মতো শাহজাদপুর থেকে চলে যান। এর পরে তিনি আর শাহজাদপুরে আসেননি।শাহজাদপুর ছিল রবীন্দ্রনাথের অত্যান্ত প্রিয় এবং ভালোবাসার একটি স্থান। তাঁর ভালোবাসার কথা তিনি বিভিন্ন লেখায় বিশেষ করে ‘ছিন্নপত্র’ ও ‘ছিন্নপত্রাবলী’তে গভীর আবেগ এবং আন্তরিকতার সাথে উল্লেখ করেছেন। ১৮৯৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর শাহজাদপুর থেকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘ এখানে (শাহজাদপুরে) যেমন আমার মনে লেখার ভাব ও ইচ্ছা আসে এমন কোথাও না।’’ (ছিন্নপত্র- পত্র সংখ্যা-১১৯) এছাড়াও অন্যান্য লেখাতেও শাহজাদপুর সম্পর্কে তাঁর আবেগময় ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে ১৯৪০ সালে শাহজাদপুরের তৎকালীন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হরিদাস বসাকের চিঠির জবাবে তিনি লিখেছেন,‘শাহজাদপুরের সাথে আমার বাহিরের যোগসূত্র যদিও বিচ্ছিন্ন তবুও অন্তরের যোগ নিবিড়ভাবে আমার স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। আমার প্রতি সেখানকার অধিবাসীদের শ্রদ্ধা এখনো যদি অক্ষুন্ন থাকে তবে আমি পুরস্কার বলে গণ্য করব’’ (শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ-মোহাম্মদ আনসারুজ্জামান)। শাহজাদপুরের প্রতি রবীন্দ্রনাথের এই ভালবাসা একে দিয়েছে মর্যাদা ও গৌরবের এক ভিন্ন মাত্রা। শাহজাদপুরও রবীন্দ্রনাথকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে হৃদয়ে লালন করছে। প্রতিদিন দেশ বিদেশ থেকে বহু দর্শনার্থী কবির স্মৃতিধন্য এই স্থানটি দর্শনে আসেন।

 

এছাড়া প্রতি বছর সরকারি উদ্যোগে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে তিন দিন ব্যাপী ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালিত হয়। এই জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। রবীন্দ্র-কাচারিবাড়ীর মিলনায়তনে কোনভাবেই স্থান সংকুলান হয় না। তাই একান্ত প্রয়োজন দেখা দিয়েছে একটি রবীন্দ্র মুক্ত মঞ্চের। কাচারিবাড়ীর দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে একটি মুক্তমঞ্চ নির্মাণের মতো যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। কাচারিবাড়ীর প্রত্নতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখার জন্য যা কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তা জরুরী ভিত্তিতে গ্রহণ করার পরামর্শ সুধী মহলের। সাম্প্রতিককালে শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবী দলমত নির্বিশেষে এখানকার সব মানুষের প্রাণের দাবীতে পরিণত হয়েছে। উল্লেখ্য, আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের নামে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান আছে বলে জানা নেই।

 

চলন বিল 

দর্শনীয় স্থান 

চলন বিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল এবং সমৃদ্ধতম জলাভূমিগুলির একটি। দেশের সর্ববৃহৎ এই বিলটি বিভিন্ন খাল বা জলখাত দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত অনেকগুলি ছোট ছোট বিলের সমষ্টি। বর্ষাকালে এগুলি সব একসঙ্গে একাকার হয়ে প্রায় ৩৬৮.০০ বর্গ কিমি এলাকার একটি জলরাশিতে পরিণত হয়। বিলটি সংলগ্ন তিনটি জেলা নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এর অংশ বিশেষ জুড়ে অবস্থান করছে। চলন বিল সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ ও পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলা দুটির অধিকাংশ স্থান জুড়ে বিস্তৃত। এছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ থানার তিন চতুর্থাংশই এ বিলের মধ্যে অবস্থিত। বিলটির দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্ত পাবনা জেলার নুননগরের কাছে অষ্টমনীষা পর্যন্ত বিস্তৃত। এ জেলায় চলন বিলের উত্তর সীমানা হচ্ছে সিংড়ার পূর্ব প্রান্ত থেকে ভদাই নদী পর্যন্ত টানা রেখাটি যা নাটোর, পাবনা ও বগুড়া জেলার মধ্যবর্তী সীমানা নির্দেশ করে। ভদাই নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত তাড়াশ উপজেলা ও পাবনা জেলা বরাবর উত্তর-দক্ষিণমূখী একটি রেখা টানলে তা হবে বিলটির মোটামুটি পূর্ব সীমানা। বিলটির প্রশস্ততম অংশ উত্তর-পূর্ব কোণে তাড়াশ থেকে গুমনী নদীর উত্তর পাড়ের নারায়ণপূর পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিমি বিস্তৃত। সিংড়া থেকে গুমনী পাড়ের কচিকাটা পর্যন্ত অংশে এটির দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি, ২৪ কিমি।

 

ব্রহ্মপুত্র নদ যখন তার প্রবাহপথ পরিবর্তন করে বর্তমান যমুনায় রূপ নেয়, সে সময়েই চলন বিলের সৃষ্টি। করতোয়া ও আত্রাই নদীর পরিত্যাক্ত গতিপথ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে একটি ব্যাপক বিস্তৃত হ্রদে পরিণত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটি সম্ভবত একটি পশ্চাৎজলাভূমি ছিল। চলন বিলের গঠন ঐতিহাসিকভাবেই আত্রাই ও বড়াল নদীর সংকোচনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আত্রাই নদী ছিল চলন বিলের প্রধান যোগানদাকারী প্রণালী যা রাজশাহী জেলার উত্তরাংশ ও দিনাজপুর এলাকার জল নিস্কাশন করত। বড়াল চলন বিল থেকে জল নির্গমন পথ হিসেবে কাজ করে এবং বিলের পানি বহন করে যমুনা নদীতে ফেলে। গঠিত হওয়ার সময় চলন বিলের আয়তন ছিল প্রায় ১,০৮৮ বর্গ কিমি।

 

চলন বিলের দক্ষিণ প্রান্ত ঘেঁষে রয়েছে গুমনী নদী যা বিলটির পানি বয়ে নিয়ে প্রথমে বড় বিলে ফেলে এবং শেষ পর্যন্ত যমুনায় পতিত হয়। যমুনা বন্যা প্লাবিত হয়ে পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে বড়াল সেই পানি কিছুটা ধরে রাখে এবং বিলের পানিও বেড়ে যায়; যমুনার পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত পানির এই উচ্চতা কমে না। শুষ্ক মৌসুমে বিলের বৃহত্তর অংশ শুকিয়ে ২৫.৯ থেকে ৩১.০৮ বর্গ কিমি আয়তনের এক জল গহবরে পরিণত হয়, যাকে বিলের ‘মুল অংশ’ বলা যেতে পারে। এই মুল অংশ অবশ্য অব্যাহত পানি সরবরাহ থেকে বঞ্চিত, বরং কিছু সংখ্যক অগভীর জলাশয়ের সমষ্টি যা পরস্পর অত্যন্ত আঁকাবাঁকা কিছু খাল দ্বারা সংযুক্ত। এই মূল অংশকে ঘিরে দুটি এককেন্দ্রিক অসম ডিম্বাকার এলাকা আছে যেখানে আঞ্চলিকভাবে ‘ভাসমান ধান’ নামে পরিচিত সরু চালের ধান উৎপন্ন হয়।

 

বর্তমানে চলন বিল দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর গঙ্গা থেকে পলি এসে পড়ার দরুন বিগত দেড়শ বছরে বিলটি দক্ষিণ দিক থেকে অন্ততপক্ষে ১৯.৩২ কিমি সরে এসেছে। বিলটিতে প্রবাহদানকারী নদীগুলি, যথা গুড়, বড়াল ইত্যাদিও এটির আয়তন সংকোচনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। বিলটির পানি নিষ্কাশন প্রণালী এবং পলি সঞ্চলের বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখার জন্য গণপূর্ত বিভাগ ১৯০৯ সালে একটি জরিপ চালিয়ে দেখেছে যে, চলন বিল তার পূর্বেকার আয়তন ১,০৮৫.০০ বর্গ কিমি থেকে সংকুচিত হয়ে ৩৬৮.০০ বর্গ কিমি এ দাড়িয়েছে। অবশিষ্ট জমি ব্যবহৃত হয়েছে চাষাবাদ অথবা জনবসতির জন্য। এই হ্রাসপ্রাপ্ত এলাকার মাত্র ৮৫ বর্গ কিমি -এ সারা বছর ধরে পানি থাকে।

 

চলন বিল বেশ দ্রুত ভরাট হয়ে আসছে। জমি পুনরুদ্ধার হচ্ছে এবং বিলের ধার দিয়ে গড়ে উঠছে গ্রাম। কেবল কেন্দ্রের গভীরতম অংশটুকু ছাড়া শুকনো মৌসুমে সমস্ত ছোট-বড় বিল শুকিয়ে যায়। কেন্দ্রের বাইরে প্রান্তীয় এলাকাগুলিতে শুষ্ক মৌসুমে বোরো ওউচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করা হয়। বর্ষার সময় অগভীর প্রান্তীয় এলাকায় গভীর পানির আমন ধান চাষ করা হয়। উত্তরবঙ্গের মাছের চাহিদা পূরণে চলনবিল এখনও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।


মিল্কভিটা Bangladesh Milk Producers Co-operative Union Limited (BMPCUL)নামক সংস্থার তৈরী দুগ্ধজাত সামগ্রীর ট্রেড-মার্কের নাম। সমবায়ের আওতায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দুধ সংগ্রহ করে শহরবাসীর দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রীর চাহিদা পূরণে সচেষ্ট রয়েছে। বাংলাদেশের বৃহত্তম দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার সবচেয়ে বড় কারখানাটি শাহজাদপুরের বাঘাবাড়িতে অবস্থিত। এই কারখানায় দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াও দুগ্ধজাত ঘি, মাখন, দই, আইসক্রিমসহ নানা ধরনের পণ্যের উৎপাদন হচ্ছে। মিল্কভিটার প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ দুধ শাহজাদপুরের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের দুগ্ধ খামারথেকে সংগ্রহ করা হয়। এই দুগ্ধ খামারের সংখ্যা প্রায় ৮,৪৬৮টি। এসব খামারে উন্নত জাতের গাভী পালন করা হয় এবং কোন কোন গাভী থেকে দিনে প্রায় ৩০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। এখানে প্রচুর দুধ পাওয়া যায় বলে দুগ্ধজাত মিষ্টান্ন ও অন্যান্য খাদ্য তৈরী শিল্প গড়ে উঠেছে ব্যাপক হারে। বর্তমানে BMPCULদেশের ছয়টি দুধ উৎপাদক এলাকা টাঙ্গাইল, টেকেরহাট, বাঘাবাড়ি, রংপুর ও শ্রীনগরে কাজ করে। নিজেদের প্রাথমিক সমবায় সমিতিগুলির প্রতিষ্ঠিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দুধ সংগৃহীত হয়। নগদ অর্থের বিনিময়ে সদস্যরা দিনে দুবার সমিতিকে দুধ যোগান দেয়, তবে স্থানীয় বাজার-বারে সাপ্তাহিক পাওনা পরিশোধই অধিকতর সুবিধাজনক। দুধে বিদ্যমান চর্বি ও অন্যান্য উপাদানের অনুপাতেই দুধের দাম নির্ধারিত হয়। সমিতিতে সংগৃহীত দুধ প্রাথমিক প্রসেসিংয়ের জন্য নিকটতম কারখানায় পৌছানো হয়। টাঙ্গাইল, টেকেরহাট ও শ্রীনগর অঞ্চলের দুধ ঢাকায় আসে এবং তাথেকে তরল দুধ, আইসক্রিম ও দই প্রস্তুত করা হয়।বাঘাবাড়ি ঘাটের দুধ থেকে বাঘাবাড়ি ঘাটের ডেইরি কারখানা গুঁড়াদুধ, মাখন, দই ও ঘি উৎপাদন করে। সংস্থার দুগ্ধজাত সামগ্রী ‘মিল্ক ভিটা’ ট্রেডমার্ক নামে বাজারজাত হয়।


সরকার নির্ধারিত দায়িত্বের অংশ হিসেবে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন খাতের উন্নয়ন তত্ত্বাবধানের ধারায় বিআইডাব্লিউটিএ অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরসমূহের উন্নয়নের প্রকল্প হাতে নেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, চাঁদপুর, বরিশাল এবং খুলনায় পাঁচটি প্রধান অভ্যন্তরীণ বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকার ১৯৬০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তারিখের ৪৬২-এইচটিডি নং গেজেট নোটিফিকেশন দ্বারা ১৯০৮ সালের বন্দর আইনের প্রবিধানসমূহ এই পাঁচটি অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে ঘোষণা করেন। পরবর্তী সময়ে আইডব্লিউটি খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে ছয়টি নতুন অভ্যন্তুরীণ নদীবন্দরপ্রতিষ্ঠা করা হয়পটুয়াখালী (১৯৭৫), নগরবাড়ি (১৯৮৩), আরিচা (১৯৮৩), দৌলতদিয়া (১৯৮৩), বাঘাবাড়ি (১৯৮৩) এবং নরসিংদী (১৯৮৩)। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বড়াল নদীর তীরে স্থাপিত হয়েছে বাঘাবাড়ি নদী বন্দর। বাঘাবাড়ি নদী বন্দরের পেট্রোলিয়াম ডিপো থেকে পেট্রোলিয়াম জাতীয় দ্রব্য এবং সার সরবরাহের মধ্য দিয়ে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়। এই বন্দরটি সিরাজগঞ্জের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে।

 

হৃড়াসাগর নদী 

দর্শনীয় স্থান 

আত্রাই-বড়াল এবং ফুলজোড় (বাব্দালী-করতোয়া)-এর সম্মিলিত স্রোতধারা। চলন বিলের পূর্ব প্রান্তে চাঁচকইর নামক স্থানে গুমানী নদীর গুর নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে গুমানি নামে প্রবাহিত হয়। চাটমোহরের পূর্ব দিকে এসে এটি বড়ালের সঙ্গে মিলিত হয়ে বড়াল (আত্রাই-বড়াল) নামে প্রবাহিত হয়েছে। চাটমোহর থেকে ৪৮ কিঃ মিঃ পূর্ব-দক্ষিণে বাঘাবাড়ির কাছে এই আত্রাই-বড়াল নদী তার বাম তীরে ফুলঝোড় (বাঙ্গালী-করতোয়া) নদীকে ধারন করে এবং মিলিত প্রবাহ হুড়াসাগর নামধারণ করে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়া পুলিশ স্টেশনের কাছে হুড়াসাগর তার ডান তীরে ইছামতি নদীর প্রবাহকে ধারণ করে যমুনা নদীতে পতিত হয়েছে।

 

বাঘাবাড়ি থেকে কিছুটা ভাটিতে বেড়া বাজারের সামান্য উত্তর-পশ্চিমে একটি বিরাট বহুমূখী সেচ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে । এখানে একাধারে সেচ কাজের জন্য পানি হুড়াসাগর থেকে নিয়ে ইছামতি নদী বা খালে দেওয়া হবে যা এই সেচ প্রকল্পের প্রধান খাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে। আবার বর্ষা মৌসুমে সেচ এলকায় অতিরিক্ত পানি নিস্কাষণ করে হুড়াসাগর নদীর মাধ্যমে যমুনায় প্রবাহিত করা হবে।

 

ইছামতি থেকে নৌ-যান গুলি সরাসরি হুড়াসাগর যাওয়ার কোন সুবিধা ছিল না বিধায় নেভিগেশন লক নির্মাণ করা হয়েছে, যার সাহায্যে দুই পার্শ্বের দুই নদীর পানির লেভেলের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও ছোটখাটো দেশী নৌকা এপার-ওপার করা যায়। বর্তমানে এই নদীর প্রবাহ খুবই কমে গিয়েছে। শুকনো মৌসুমে পানি প্রায় একেবারেই থাকে না। এ অবস্থা ভবিষ্যতে বেড়া সেচ প্রকল্পের সফল পরিচালনার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।


মহকুমার হিন্দু তীর্থ ও দর্শনীয় স্থান

 

সিরাজগঞ্জ থানা ঃ১) শহরের উত্তরে যমুনা নদীর তীরে শ্মাশানঘাট ও মন্দির।এটারোকনী পরিবারের পূর্বপুরুষ রাম রায়ের (প্রখ্যাত জমিদার) কীর্তি।

২) কালীবাড়ী রোডস্থিত প্রাচীন কালিবাড়ী। এখানে বিরাট কাষ্ঠ নির্মিত রথ ছিল। এখন জীর্ণদশা। এখান হতে রথযাত্রা ও উল্টোরথ পর্ব উদযাপিত হয়।

 

৩) দরগা রোডের মহাপ্রভুর আখড়া। জাকজমকপূর্ণভাবে এখনে বিভিন্ন পুজা উদযাপিত হয়।

 

কামারখন্দ থানা ঃ১) ঝাঐলের বিখ্যাত গোষ্ঠ যাত্রা ও মেলা। এখানে একটি মন্দির ও মন্ডপ আছে। অবশ্য পূর্বের মত প্রভাব নাই। ঝাঐলের পাল জমিদারগণ বিখ্যাত। এরা রাজপুত বংশধর।

 

উল্লাপাড়া থানাঃহাটীকুমরুল ইউনিয়নস্থিত হাটিকুমরুলের নবরত্ন, সোধও মন্দির, কালের করাল গ্রাসে নিষ্পেষিত হয়ে এখন নিষ্প্রভ। ইতিহাস বিখ্যাত নবরত্ন মন্দির এখন উপেক্ষিত অথচ উৎকৃষ্ট স্থাপত্য শিল্পের নির্দশন।এটি ছিল লাহিড়ী জমিদারগণের বাসস্থান যা নাটোর রাজের সাথে সম্পর্কিত।

 

২) রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন মধ্যস্থ চৈত্রহাটি কালিবাড়ী ইতিহাস প্রসিদ্ধ। রাজা চৌচির সিংহের বাসস্থান ও র্কীতি। এটা এখন নামেই পর্যবসিত তবু তীর্থ স্থান রূপে গণ্য।

 

শাহজাদপুর থানাঃশাহজাদপুর থানার গাঁড়াদহ ইউনিয়নের তারা বাড়িয়ার নিকট পূণ্যতোয়া করতোয়া নদীতে চৈত্রমাসের পূর্ণিমা তিথির পূর্বে অষ্টমী তিথিতে এখানে ‘গঙ্গা স্নানে’ ভীড় জমে।

 

তাড়াশ থানাঃ১) নওগাঁ ও তাড়াশে হিন্দু কীর্তি থাকায় উভয় স্থান তীর্থ ক্ষেত্র রূপে পরিগণিত হয়। তাড়াশে বহু দর্শনীয় স্থান, মন্দিরাদি এখনও বর্তমান। সবই প্রাচীন কীর্তি ও ঐশ্বর্য্যমন্ডিত।

 

২) বারুহাস গ্রামের ভদ্রাবতী নদীতে পূর্বে চৈত্র পূর্ণিমার দিন গঙ্গাস্নান হত ও মেলা বসত। এখন ঐ সময় খাল শুকিয়ে যাওয়ায় স্নান পর্ব হয় না। কিন্তু তিথি উপলক্ষে মেলা বসে। অবশ্য এখন তা ভিন্নরূপ ধারণ করেছে।

 

৩) তালম গ্রামে সুউচ্চ টিলায় শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত, প্রাচীনতম কীর্তি। পূর্বে যতটা জন সমাগম হত, এখন তা হয় না তবুও বিখ্যাত।

ইলিয়ট ব্রিজ সিরাজগঞ্জ শহরের কাটা খালের উপরে লোহা ও সিমেন্টের সমন্বয়ে তৈরী। সিরাজগঞ্জ শহরকে দেখার জন্য কাঁটাখালের উপরে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু করে ইংরেজ এসডিও মিঃ বিটসন বেল আই, সি, এস, সাহেব ১৮৯৫ সনে ৪৫,০০০ টাকা খরচ করে বাংলার তৎকালিন ছোট লাট স্যার আলফ্রেড ইলিয়ট সাহেবের নামানুসারে এই ব্রিজ তৈরী করেছিলেন।


সে আমলে সন্ধ্যার পর ইলিয়ট ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে সিরাজগঞ্জ শহরের একটি ভিন্নতর রূপ নজরে পড়তো। বর্তমানে উজ্জল নিয়ন বাতির আলোকমালায় সিরাজগঞ্জের প্রতিটি সড়ক পথ শুধু উদ্ভাসিত নয়; সেই সাথে দোকানের রডলাইট ও হেড লাইটের আলোরাতের অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে রাখে। তখন ইলিয়ট ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকলে দেখা যেত ঘন অন্ধকারের মধ্যে আশপাশের কোনো অসিত্বই নাই। দিনের বেলায় দেখা গেছে, শহর থেকে অনেক দূরে অসংখ্য গ্রাম জনপদ গা-ঘেষাঘেষি করে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু রাত্রিবেলায় সেই ইলিয়ট ব্রিজের উপর সেই একই জায়গায় দাঁড়ালে মনে হতো, বিশ্বচরাচরে আর কোথাও কোন কিছুর অসিত্ব নাই। শুধু ইলিয়ট ব্রিজের দু’পাশে, উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব পশ্চিমে এক মাইল পরিসর এলাকাতেই সমস্ত দেশটা এসে ভীড় জমিয়েছে।


সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শাহজাদপুর সদরের একেবারে শেষপ্রান্তস্থিত দরগাপাড়ায় হুড়াসাগর নদীর পারে অবস্থিত। বিশ্বাস করা হয় যে, ১৫ শতকে প্রখ্যাত সুফিসাধক মখদুম শাহ এ মসজিদ নির্মাণ করেন। কোন লিপি প্রমাণে এ তারিখ নির্নয় করা হয়নি। মসজিদের স্থাপত্যরীতি ও অলংকরণ শৈলী হিসেবে মসজিদটি ১৫ শতকে নির্মিত হয়েছিল। বহুগম্বুজ বিশিষ্ট আয়তাকার মসজিদের গোত্রভূক্ত। শাহজাদপুর মসজিদ তিন সারিতে পাঁচটি করে মোট পনেরটি গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। মসজিদটির উত্তর দক্ষিণে দৈর্ঘ্য ১৯.১৩ মিটার এবং পূর্ব পশ্চিমে প্রস্থ ১২.৬০ মিটার। অভ্যন্তরভাগে এর দৈঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ১৫.৭৭মিটার ও ৯.৬০ মিটার এবং দেওয়াল ১.৫৭ মিটার পুরু। এ মসজিদটি কিবলা কোঠা দেওয়ালের লম্বে, পাঁচটি স্তম্ভপথে (‘বে’) এবং উত্তর-দক্ষিণে তিনটি স্তম্ভপথে আইল বিভক্ত হয়ে মোট পনেরটি চতুস্কোনাকার এলাকায় বিভক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থিত অন্যতম প্রাচীন এ মসজিদে প্রাথমিক সুলাতানি আমলে বিকশিত মসজিদ স্থাপত্যরীতির সকল বৈষ্ট্যই পরিলক্ষিত হয়।

 

জয়সাগর দিঘী 

দর্শনীয় স্থান 

সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলাধীন সোনাখাড়া ইউনিয়নের নিমগাছি বাজার হতে প্রায় ১ কিঃ মিঃ পশ্চিমে এ বিশাল ও প্রখ্যাত দিঘীটির অবস্থান। ঢাকা- বগুড়া মহাসড়কের ভূইয়াগাঁতী নামক স্থান হতে তাড়াশ অভিমুখী রাস্তার পাশে অবস্থিত। এ দিঘী সংলগ্ন উদয় দিঘী/কাতলা দিঘীসহ আরও কয়েকটি দিঘী রয়েছে। জয়সাগর দিঘীর বিশাল জলাধার ছাড়াও পর্যটকদের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার নিমিত্ত পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। জনশ্রুতি আছে বিরাট রাজার আমলে প্রজাদের জলকষ্ট নিবারণ ও রাজার নিজস্ব লক্ষাধিক গবাদি পশুর পানীয় জলের


জন্য এই দিঘীগুলো খনন করা হয়। ঐতিহাসিকগণের মতে পাল সাম্রাজ্যের রাজা ২য় গোপালের শাসনামলে (৯৪০-৯৬০ খ্রিঃ) জয়সাগর দিঘী খনন করা হয় (ডঃ রমেশ চন্দ্র মজুমদার ইতিহাস ১ম খন্ড পৃঃ ৫৭)। বর্তমানে এ দিঘীসহ অনেকগুলো দিঘী নিয়েজয়সাগর মৎস্য খামার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের নিকট ২৫ বৎসর মেয়াদে এ দিঘীগুলো ইজারা বন্দোবস্ত দেয়া আছে। ইজারার মেয়াদ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

 

পোতাজিয়া নবরত্ন মন্দির 

দর্শনীয় স্থান 

শাহজাদপুর সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে একটি প্রাচীন মন্দির। ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত এই মন্দিরটি ‘নবরত্ন মন্দির’ নামে পরিচিত। তিনস্তর বিশিষ্ট মন্দিরটি মধ্য যুগের হিন্দু স্থাপত্য শিল্পের অপূর্ব নিদর্শন। (শাহজাদপুরের ইতিহাস----- প্রাগুক্ত)। এই মন্দিরটির দিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নজর দেয়া খুবই জরুরি।

 

নবরত্ন মন্দির (উল্লাপাড়া) 

দর্শনীয় স্থান 

উল্লাপাড়া উপজেলাধীন হাটিকুমরুল ইউনিয়নের নবরত্নপাড়া গ্রামে নবরত্ন মন্দির নামে একটি পুরার্কীতি আছে। এর আশপাশে আরো কয়েকটি ছোট ছোট মন্দির রয়েছে। এ মন্দিরগুলো আনুমানিক ১৭০৪-১৭২০ সালের মধ্যে নবাব মুর্শিদকুলি খানের শাসনামলে তার জনৈক নায়েব দেওয়ান রামনাথ ভাদুরী নামক ব্যক্তি স্থাপন করেন। মূল মন্দিরটি তিনতলা বিশিষ্ট এবং অন্যান্য মন্দির সমূহ দোচালা এবং মঠাকৃতি আটকোনা বিশিষ্ট। এ মন্দির নির্মাণকালে প্রতিটি ইট ঘিয়ে ভেজে তৈরী করা হয়েছিল মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে। নবরত্ন মন্দিরটি ১৯৮৭ সালে সংরক্ষিত ইমারত হিসেবে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ গ্রহণ করে কিছু সংস্কার সাধন করে। এ ছাড়াও সম্প্রতি ঐ স্থানের মন্দিরসমূহের সংস্কার সাধন করা হয়েছে। আলোচ্যনবরত্ন মন্দির ও আশপাশের অন্যান্য মন্দিরের প্রকৃত অবয়ব অনেকাংশে ধবংস প্রাপ্ত হলেও এর গঠন আকৃতি ও নির্মাণ শৈলী অভূতপূর্ব।


রাউতারা বাঁধ ও স্লুইচগেট 

দর্শনীয় স্থান 

বাঘাবাড়ী মিল্কভিটা দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা থেকে নিমাইচরা পর্যন্ত যে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটি আছে সেটি ‘নিমাইচরা বাঁধ’ নামে পরিচিত। কিন্তু শাহজাদপুরের মানুষের কাছে এর নাম রাউতারা বাঁধ। এখানে উল্লেখ্য যে, নাটোরের বিখ্যাত সুবিশাল চলনবিলের দক্ষিণ পূর্বাংশ সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পশ্চিমাংশ পর্যন্ত চলে এসেছে। শাহজাদপুরের এই অংশটি বর্ষাকালে বন্যার পানিতে সাগরের মতো অকূল পাথারে পরিণত হয়। এ কারণে এটি এলাকার মানুষের কাছে ‘পাথার’ অঞ্চল নামে পরিচিত। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলে মাশকলাই এবং খেসারি ছিটিয়ে দেয়া হয়। এগুলো প্রধানত গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


শীতকালে কৃষকরা এই বাথানে গরু রেখে ঘাস খাওয়ায়।এই বিশাল গোচারণভূমিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জমিদারী থেকে দান করেছিলেন। এখন এসব সম্পত্তি নানাভাবে ভূমিদস্যুরা গ্রাস করে ফেলার কারণে রবীন্দ্রনাথের দান করা এই লাখেরাজ গোচারণ ক্ষেত্রটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে ইরিধান আবাদের প্রচলনের ফলে এখানে শুধু একটি মাত্র ফসল, ধানের আবাদ হচ্ছে। তাও অনেক সময় রাউতারা স্লুইচগেট সংলগ্ন বাঁধ ভেঙ্গে অকালে পানি এসে রাতারাতি কাঁচা পাকা সব ধান তলিয়ে যায়। ফলে কৃষকরা সর্বহারা হয়। চীনের হোয়াংহো নদীকে একসময় চীনের দুঃখ বলা হতো। এই বাঁধটিও এলাকার মানুষের সেই রকম দুঃখের কারণ হয়ে আছে। এর কারণ হিসেবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, এখানে (রাউতারাতে) যে স্লুইচগেটটি আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই ছোট। এখন যে পরিসরে আছে তারচেয়ে ৮/১০ গুণ বড় এবং আধুনিক স্লুইচগেট প্রয়োজন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পাবনা জেলার বেড়া উপজেলায় যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও স্লুইচগেট আছে সে রকম রাউতারাতেও একটি প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন। রাউতারা বাঁধের এলাকাটি পোতাজিয়া ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। এই বাঁধ ও স্লুইচগেটটি নির্মাণ করা হলে পাবনা জেলার বিশাল একটি অংশসহ শাহজাদপুরের এই অঞ্চলের ২/৩ লক্ষ একর জমির ফসল রক্ষা পাবে। তখন কৃষকরা এই জমি থেকে বছরে দু’বার ধান এবং এক বার রবিশস্যের আবাদ করে মোট তিনটি মৌসুমেই ফসল পাবে।

 

 


 

অন্যান্য

 

সদর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে চন্ডিদাসগাঁতী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ‘দুর্জয়’ নামে ১টি ভাষ্কর্য রয়েছে। উল্লাপাড়ার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মক্কাউলিয়া মসজিদ (দারোগাপাড়া পঞ্চদশ শতাব্দী), হযরত বাগদাদী (রঃ) এর মাজার শরীফ (গয়হাট্টা), পাঁচ পীরের মাজার (আঙ্গারু), চৈত্রহাটির প্রত্নতাত্তিক স্থাপনা। তাড়াশ উপজেলায় অবস্থিত বেহুলার বাড়ি ও কুয়া, হযরত শাহ শরীফ জিক্টদানী (রাঃ)-এর মাজার এবং শিব মন্দির উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা। তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নে হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী (রঃ) এর মাজার শরীফ অবস্থিত। প্রতি বৎসর ৩দিন ব্যাপী বাৎসরিক ওরস শরীফে প্রায় ৩ লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়ে থাকে। তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসারা গ্রামে কিংবদন্তী লোক কাহিনীর বেহুলার বাড়ী অবস্থিত। বর্তমানে বেহুলার কুপ নামে একটি ইন্দারা আছে। ইন্দারাটি ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

 

 

তাঁত শিল্প

 

বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁত শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। হস্ত চালিত তাঁতে বছরে প্রায় ৭০ কোটি মিটার বস্ত্র উৎপাদিত হয় যাঅভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৪০ ভাগ মিটিয়ে থাকে। এ শিল্প থেকে মূল্য সংযোজন করের পরিমাণ প্রায় ১৫০০.০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের হস্ত চালিত তাঁত শিল্প এদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প। সরকার কর্তৃক সম্পাদিত তাঁত শুমারী ২০০৩ অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ৫ লক্ষাধিক হস্তচালিত তাঁত রয়েছে তন্মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলাতে রয়েছে ১ লক্ষ ৩৫ হাজারের অধিক। মহিলাদের অংশগ্রহণ সহ গ্রামীণ কর্মসংস্থানের দিক থেকে এর স্থান কৃষির পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম। দেশের প্রায় ১৫ লক্ষ লোক পেশার ভিত্তিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ শিল্পের সাথে জড়িত।

 

 

ছয় আনি পাড়া দুই গম্বুজ মসজিদ


শাহজাদপুরের ছয় আনি পাড়ায় রয়েছে পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত দুই গম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ। ‘স্থাপত্য শিল্পের দিক থেকে এর রয়েছে ভিন্ন মাত্রিক গৌরব। কারণ পঞ্চদশ শতাব্দীতে দুই গম্বুজওয়ালা মসজিদ বাংলার আর কোথাও নির্মিত হয়েছে বলে জানাযায় না’’ (শাহজাদপুরের ইতিহাস---- প্রাগুক্ত)।তাই এই মসজিদটির সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য সরকারের নজর দেয়া প্রয়োজন বলে এলাকাবাসীর দাবি।


ভ্রমণের উপকারিতাঃ

জীবনের প্রয়োজনে,চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে আপনাকে আপনার এলাকার সম্পর্কে দর্শনীয় স্থানসমূহ বিশেষ ব্যক্তিবর্গ এবং আপনার এলাকার বিশেষ বিশেষ কিছু নিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্ন করতেই পারেন এবং ম্যাক্সিমাম সময় প্রশ্ন করে তাই আপনার এলাকা সম্পর্কে আপনার নিজের জানা উচিত তাই আপনার এলাকার সম্পর্কে আমরা খুঁটিনাটি সকল তথ্য তুলে ধরেছি। ভালোভাবে বাচাঁর তাগিদে যেমন সবসময় উন্নত জীবনযাত্রার কথা ভাবতে হয়। তেমনি মানুষিক সাস্থ্যের কথা ভেবে নিজ দেশে বা দেশের বাহিরে ঘুরতে যাওয়া ও প্রয়োজন। জেনে রাখা ভালো বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ। নিজ জেলার বা অন্য যে কোন জেলার উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামসংখ্যা দেখুন আলাদা আলাদা জেলার ছবিগুলোতে।সারাবছর ভ্রমণের স্থানসমূহ উন্মুক্ত থাকলেও আমরা সাধারণত শীতকালে ভ্রমণ করতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করি।

জেনে নিন ভ্রমণের দরকারি টিপসঃ

শীতকালীন ছুটিতে ঘুরতে বা বেড়াতে যাওয়া আরামদায়ক তাই শীতকালে পরিবার পরিজন নিয়ে যেকোন ভ্রমণস্পটে বা পিকনিকে যাওয়া খুবই আনন্দদায়ক।এই শীতে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায় তা নিয়ে অনেকেই ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন। কোথায় ঘুরতে যাবেন তার আগে প্রয়োজন প্রস্তুতি । ঘুরতে যাওয়ার আগে ভালো প্রস্তুতির উপর নির্ভর করবে ভ্রমণ কতটা আনন্দময় হবে। 

সাথে রাখুনঃ

জাতীয় পরিচয়পত্র, স্থানীয় জরুরি ফোন নম্বরসমূহ, হোটেল বা কটেজ সমূহের ঠিকানা ও ফোন নম্বর। শীতবস্ত্র, পানির বোতল, রোদের চশমা, ফোনের চার্জার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ, অতিরিক্ত অর্থকরি।

কোথায় যাবেনঃ

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে নির্ধারণ করে নিন আপনি কোথায় যেতে চান। বেড়াতে যাওয়ার আগে দেখুন কোন জেলার কোথায় কি কি দর্শণীয় স্থান রয়েছে। দেখে ভেবে নিন কোথায় বেড়াতে যাবেন। শীতকালের জন্য ভ্রমণের উপযোগী স্থানসমূহ হলো সাগর, পাহাড়, হাওড়, বন, নদী ঠিক কোন জায়গা আপনার বেশি পছন্দ সঙ্গে কাদের নিয়ে যাবেন। যেখানে যাবেন সেখানকার সুযোগ-সুবিধা কেমন। এই বিষয়গুলো চিন্তা করলেই আপনি পেয়ে যাবেন কোথায় যাওয়া ভালো্। 

কিভাবে যাবেনঃ

ভ্রমণে পরিবহন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।আপনি বাস, ট্রেন, প্রাইভেট কার, লঞ্চ কোনটায় যাবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। ফোনে বা কারো মাধ্যমে রাস্তার লোকেশন জেনে নিন।

COMMENTS

Get All The Latest Updates Delivered Straight Into Your Inbox For Free!

নাম

. Information,6,& Viva Exam Date,1,1,1,1nd Class Job,1,1rd Class Job,1,1st ciass job,37,1st class,2,1st Class Job,7,1st Class Bank Job,27,1st Class Defence Job,16,1st Class Doctor's Job,23,1st Class Engineering Job,140,1st Class Government Job,114,1st class job,168,1st Class ob,1,1st Class Police Job,2,1st Class Professor Job,4,1st Class Professor's Job,41,1st Class Teacher,7,1st Class Teacher Job,13,1st Class Teacher's Job,6,2021-22 result,1,2nd Class,31,2nd Class Job,34,2nd Class Bank Job,5,2nd Class Engineering Job,4,2nd Class Job,259,2rd Class Job,1,2st Class Job,1,2th Class Job,1,3nd Class Job,1,3rd Class Job,844,3st Class Job,3,3th Class Job,9,4nd Class Job,9,4rd Class Job,1,4st Class Job,4,4th Class Job,613,প্রশ্ন ও সমাধান,1,প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ,1,About the admission IN Bangladesh Medical and Dental Admission Council MBBS of 2021 M B B S examinees,1,Addmission,1,Admission,11,Admission result,3,admit,1,Admit Card,8,Admit Card Download,5,Airforce Job,2,Airlines Job,2,Airport Job,1,‍Allowance,1,Ansar Job,5,Anser Job,1,Application,2,Army Job,8,Aviation Job,2,BAC Job,1,Bangladesh ‍Acredition Council Job,1,Bangladesh Bank Exam Date,1,Bangladesh Betar jobs result news,1,Bank job,85,Bank Result,1,Banking Job,5,BBS Job Exam Date,1,BEPZA Job.,1,Biman Job,4,Biotechnology Job,1,BIWTA Job,1,BOF Job,1,BPSC Job,1,BRAC BANK,1,BRRI Job,1,BSCIC Job,2,BSMMU Admit Card,1,BTV Job,1,Cader Job,1,Cadet College Job,1,Cadet Job,1,Cantonment Job,3,CGA Result,1,Circular,1,City Corporation Job,1,City Manager Job,1,college,2,College Job,14,Community Health Center Job,2,Community Job,1,Company J০b,1,Company Jb,1,Company JOb,244,Compny Job,1,computer,1,Computer Job,34,Cooker Job,2,Covernment Job,1,Customar Care Service Center,1,Defence Job,33,Defense Job,10,Department of Social Service,2,Department of Social Service job,1,DMTCL Job,2,DNC Admit Card,1,Doctor Job,3,Doctor's Job,15,DPE,4,Driver Job,8,Driving job,24,Driving License,2,DSS Job,2,E-Commerce Job,2,E-PASSPORT,1,education,1,Education Exam,1,Electrical Job,19,Embassy Job,1,Engineer Job,3,Engineering Job,120,Exam,3,Exam Date,2,exam Result,5,Exam Date,607,Exam Date & Download Admit,4,Exam Date Change,1,Exam DATE Information,2,Exam Date Notice,1,Exam Postponed Circular,3,Exam Result,298,Exam Result & Viva Exam Date,1,Exam Result Exam Date,1,Exam Resut,1,Exam's Date,1,Exam's Result,1,Exam’s Result,6,ExamDate,1,Final Result,45,Fire Service Job,2,Firemen Job,1,Food Exam Result,1,Foreign Job,6,Gjovernment Job,1,Governement Office Job,1,Governement Job,2,Governemnt Job,1,Governemt Job,1,Governent Job,2,Government,3,Government Job,1,Government Jbo,1,Government Job,1034,Government Job Exam Date,5,Government Job Information,2,Government Job News,1,Government Job Notice,2,Government Job with Training,7,Government Job's Viva Exam Date,4,Government Job's Written Exam Date,2,Government Job's Dxam Date,8,Government Job's Exam Date,5,Government Job's Exam Date Postponed,2,Government Job's Exam result,3,Government Jobl University Job,1,Government Jobs,80,Government Office,1,Government Office Job,101,Government Office Job Circular,1,Government Pay-Scale,2,Government Rules,1,GovernmentJob,5,Governmet Office Job,2,Governmetn Job,4,Governmrnt Job,1,Govt. Job,28,Grammar,1,Health Job,10,High Commission Job,1,Hill District Council Job,1,Hospital Job,13,Housing Loan,1,HSC,1,HSC Exam,1,HSC Exam Result,1,iBAS++,1,ICT Division Job,4,Immigrant workers,1,Industry Job,1,Infomation,4,Inforamtion,2,Informaiton,4,Informantion,8,Informartion,3,Informatio,5,Information,1577,Informaton,1,Informtation,1,Informtion,1,Infromation,8,Infrormation,2,Job,4,job circular,4,Job Details,1,Job Exam Date,8,job Government Job,2,Job Result,1,Just Exam Date,1,Key Account Manager Job,1,Laboratories Job,1,Lawyer Job,10,Lecturer Job,30,M B B S,1,Marketing Job,2,Marketing Job,1,Medical,1,Medical Job,21,Medicine Job,2,Metro Rail Job,2,Ministry Job,2,Municipality Job,2,Navy Job,8,Navy Result,1,new Votar,1,NGO,1,NGO Job,39,nid,1,Non 'Government Job,6,Non Cadre Job,3,Non Government Job,117,Non-Cadre Job,1,Notice,6,notice.,1,Noun,1,Nurse Job,5,Nurseing Job,6,Nursing,1,Nursing Job,12,October Job Exam Date 2022,1,Officer Job,7,Old Age Allowance,2,on Government Job,1,Outsourching Job,1,overnment Job,1,Part time Job,1,Part Time Job Doctor's Job,2,Petrobangla Job,1,Pointsman,1,Police Job,10,Police Super Office Job,2,Polli Biddut Job,6,Polli Biddut Job.,1,Polli Bidduyt Somity Job,3,port Job,2,Postponed,2,Postponed Circular,4,Postponed Exam Date,4,Postponed Job Exam Date,1,Postponed Job Exams,1,primary,1,primary education,1,Primary job circular declaration,1,Primay Job,2,Principal Job,4,Private Job,144,Privet Job,5,professor's job,27,Pronoun,1,Proyas Job,1,Rajshahi,1,Result,269,Result Information,1,ritten Exam Result & Viva Exam Date,1,ru result,1,Running Job Circular,1,Sailor Job,2,Sailors Job,1,School Job,43,Scientist,3,Seat Plan,4,Seatplan,1,See Exam result,2,See Result,2,Senior Nurse Exam,2,Senior Nurse Job,4,smart card,1,Software Job,1,Special child,1,SSC,1,SSC Exam,1,SSC Exam Result,1,st Class Government Job,1,Stor Manager Job,1,teacher,1,Teacher Job,73,Teacher's Job,4,Teaching,11,Technical Job,5,Technical Training Center Gttc,1,Temporary Job,1,th Class Job,1,To Get Duel Citizenship,1,Tourist Spots,1,Training,8,Training Job Circular,2,Training Circular,1,Training with Job,3,University Job,101,Upazilla Nirbahi Office Job,1,Vendor Coordinator Job,1,Verb,1,viva,2,Viva Exam Date,103,Viva Exam Result,4,Viva test date,2,voter 2022,1,Wasa Job,1,Widow Allowance,2,Written exam,1,written Exam Date,5,written Exam Date,2,written Exam Result & Viva Exam Date,2,
ltr
item
BDJobs7Days: সিরাজগঞ্জের পর্যটন ও ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থান সমূহ
সিরাজগঞ্জের পর্যটন ও ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থান সমূহ
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg1aGTKoUh2xQtZKYei4szMf-PCTTWldJvnqEJDkPbgWipy-GQrB0haZidxhMF__M-h0Ddv2nM5QU-3diGy2O6zHkoQtir8C_zj_kUROdNDXZFGjCgOZBUgFiZNbQ5Tca46QF-DhDar4vBLQVD_yRSt08b-iJjzA71f4pRrUkMWttI9JBuyUlEdv1xkaA/s16000/Bank%20job%20logo.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg1aGTKoUh2xQtZKYei4szMf-PCTTWldJvnqEJDkPbgWipy-GQrB0haZidxhMF__M-h0Ddv2nM5QU-3diGy2O6zHkoQtir8C_zj_kUROdNDXZFGjCgOZBUgFiZNbQ5Tca46QF-DhDar4vBLQVD_yRSt08b-iJjzA71f4pRrUkMWttI9JBuyUlEdv1xkaA/s72-c/Bank%20job%20logo.jpg
BDJobs7Days
https://www.bdjobs7days.com/2022/05/blog-post_359.html
https://www.bdjobs7days.com/
https://www.bdjobs7days.com/
https://www.bdjobs7days.com/2022/05/blog-post_359.html
true
4007071098722840083
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy