Procedures to buy and sell lands জমি ক্রয়-বিক্রয় করণীয়

 


জমি ক্রয়-বিক্রয় করণীয় Procedures to buy and sell lands

  জমি ক্রয়-বিক্রয় করণীয় Procedures to buy and sell lands বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ  একটি দেশ এদেশের মোট আয়তন ১৪৭৫৭০ বর্গ কি মি ১৫ কোটি জনসংখ্যা পূর্ণ বাংলাদেশের মাথাপিছু জমির পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত এদেশে মাথাপিছু জমির পরিমাণ প্রায় ৩০ একর এর মধ্যে রয়েছে বাড়িঘর নদনদী পাহাড়-পর্বত বন-জঙ্গল রাস্তাঘাট শিল্প-কারখানা শহর-বন্দর ইতালি দেশের শতকরা ২৫ ভাগ আবাদি জমির মাত্র ২ পার্সেন্ট লোকের মালিকানায় পক্ষন্তরে ৪.৮ আওয়াদি ভূমি 50% চাষীর মালিকানায় জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান 48 দশমিক 10 শতাংশ ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় ।

 জনসংখ্যার অত্যাধুনিক চাপের কারণে বাংলাদেশের সব ধরনের জমির চাহিদা বেড়েই চলেছে কাজেই বাড়ি ঘর নির্মাণ করার জন্য এখানে জমি পাওয়া বেশ কষ্টোকর বিশেষ করে শহরাঞ্চলে আবাসিক সংকট নিরসনে জমি পাওয়া গেল তার দাম অনেক বেশি এ অবস্থায় দালাল এবং প্রতারক চক্র এসে কোন আগ্রহী ক্রেতা কে সস্তায় ভালো জমির খবর দেন তখন জমি যাতে হাতছাড়া না হয় তার জন্য ক্রেতার দ্রুত বায়না ও রেজিস্ট্রি করে মূল্য পরিশোধ করে জমি দখল করতে চায় জমি দখল করতে গিয়ে অনেক সময় ক্রেতা দেখেন যে বিক্রেতা ওই জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে ছিলেন ওই জমি নিয়ে অন্য অংশীদার এর সঙ্গে দীর্ঘদিন বিবাদ চলছে বিক্রেতা ইতিপূর্বে বারবার জমি বিক্রয় করার পর তার বিক্রিযোগ্য কোন শর্ত ছিল না অর্পিত সম্পত্তি সরকার কর্তৃক হুকুমদখল হয়েছে যে ওয়ারিশ সূত্রে বিক্রেতা মালিকানা দাবি করছে তা উপযুক্ত আদালত কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়নি এ অবস্থায় ক্রেতার মাথায় বাজ পড়ার মত অবস্থা দালাল বা প্রতারক চক্র ইতিমধ্যে গা-ঢাকা দিয়েছে সরলতা জমি উদ্ধারের জন্য দেওয়ানী আদালতের আশ্রয় নেন দীর্ঘকাল মামলায় হাজিরা দিতে দিতে মামলার চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ক্লান্ত-বিধ্বস্ত ক্রেতাকে সকলের নির্বুদ্ধিতার জন্য অপবাদ দেন প্রবাসী ।


ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ,রংপুর,চট্রগ্রাম, নওগাঁ, নাটর, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, শোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা,

অনেকেই জমি কেনার জন্য দালালের মাধ্যমে তার ফাঁদে পা দেয় চেয়ে বেশি ফাঁদে পা দেন সদ্য বিদেশ হতে দেশে প্রবর্তনকারী ব্যক্তিরা এবং সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তা সীমিত সামর্থ্য কারণে কর্মকর্তারা ও কর্মচারীগণ অনেক সময় সস্তায় জমি কেনার সুযোগ পাবেন এবং অনেক সময় সস্তায় কিনে দীর্ঘকাল ঝামেলায় ভোগেন আবার অনেক সময় বিরোধপূর্ণ জমি উদ্ধারের জন্য কোন কোন পক্ষ সন্ত্রাসী ও ভাড়াটিয়া মাস্তানদের ব্যবহার করে ফলে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সূত্রপাত হয় দাঙ্গা-হাঙ্গামার ফলে মানুষের জীবন ও সম্পত্তি বিনষ্ট করা হয় এভাবে জমি দখল করতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয় এর জন্য দায়ী সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করে সমস্যাপূর্ণ জমি ক্রয় করা।


 ভূমির মালিকানা  উৎস Land owing system


ভূমি মালিকানা বিরোধ অনেকাংশে ভূমি মালিকানা উৎসের সাথে জড়িত মালিকানার উৎস নিম্নোক্তভাবে হয়ে থাকে যথা উত্তরাধিকারসূত্রে, ক্রয়সূত্রে, ভূমি বন্দোবস্ত প্রাপ্তির সূত্রে নিলাম স্বীকৃতি পত্র আদালতের রায় মূলে ভূমি অগ্রধিকার মূলে  দান হেবা উইল ইত্যাদি ক্ষেত্রে।


 হাজার ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন এ ৮৬,৮৭, ৮৯,৯০,৯১,৯২,৯৩,৯৪,৯৫,৯৬,৯৭,১১৭,১৪৩,ও১৪৪ ধারা মূলে।


জমি ক্রয়ের পূর্বে ক্রেতা সাধারণের কর্তব্য জমি ক্রয়ের পূর্বে ক্রেতা কর্তৃক কিছু তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা অবশ্য

১। জমি বিক্রেতার প্রকৃত মালিকানা স্বত্ব আছে কিনা ।

২। মালিকানার প্রমাণ হিসেবে বিক্রেতার নামের সর্বশেষ জমির জরিপের এ রেকর্ড অথবা আর এস রেকর্ড আছে কিনা রেকর্ড খতিয়ানের মূল কপি সত্যায়িত কপি দেখে নিশ্চিত হতে হবে ।

৩। বিক্রেতা যদি কড়াইশুঁটির জমির মালিক হয়ে থাকেন তাহলে তার নামে মিউটেশন বা নামজারি করা আছে কিনা

৪। বিক্রি প্রস্তাবিত জমি দখল যাচাই করা৫  খাজনার দাখিলা যাচাই করা

৬। বিক্রি প্রস্তাবিত জমির দাগ নম্বর খতিয়ান নম্বর জেলা রেকর্ড রেকর্ড এবং উপসহকারী ভূমি অফিসে রেকর্ড যাচাই করে জমির মালিকানা সূত্রে নিশ্চিত হতে হবে

৭। অনেক সময় অসাধু দালাল ও ভূমি মালিক সরোজমিনে জমি দেখায় এবং রেজিস্ট্রি করার সময় অন্য দাগ নম্বর এসে করে দেন এই অবস্থা হতে পরিত্রান পেতে হলে রেজিস্ট্রি করার পূর্বে রেকর্ড নকশায়ও সরোজমিনে জমির দাগ নম্বর শনাক্ত করতে হবে

৮। কৃষি জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে রেকর্ডিং মালিকানা অংশীদারগণ অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন সুতরাং অংশীদারের সম্মতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে

৯। মালিকানা মালিকদের জমি পড়ায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এতে জমি দখলের জন্য দাঙ্গা ফাসাদ এবং মামলা-মোকদ্দমায় জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

১০।  হাসি দেওয়ার উদ্দেশ্যে জমির বাজারমূল্য অপেক্ষা কম মূল্য নির্ধারণ করে দলিল রেজিস্ট্রি করলে স্ট্যাম্প আইন 64 ধারা মোতাবেক ক্রেতা বিক্রেতার শাস্তি হতে পারে

১১। মালিকানা নিয়ে বিরোধ আছে এমন জমি ক্রয় করলে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে

১২।  বাজারমূল্য চেয়ে অনেক কম দামে জমি বিক্রয়ের প্রস্তাব হলে তার মধ্যে নিহিত থাকার সম্ভাবনা বেশি সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্ট্রার অফিসের জমির মূল্য এবং এ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে

১৩। শহরতলীতে বিক্রির জন্য প্রস্তাবিত জমি সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ হয়েছে কিনা অথবা অধিগ্রহণের প্রস্তাবে কিনা তা সংশ্লিষ্ট অফিসের যাচাই করে দেখা অবশ্যই

১৪।  বিক্রেতার মালিকানা স্বত্ব ও দোকান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া উদ্দেশ্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পরীক্ষা করে যাচাই করার জন্য অবশ্য হলে ভূমি বিষয়ক এবং সৎ ও নিষ্ঠাবান আইনজীবীর পরামর্শ নেয়া উচিত

১৫।  কোন জমি প্রথম বিক্রি করার পর নামজারি করার পূর্বে যদি একাধিকবার বিক্রির মাধ্যমে হস্তান্তরিত হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট সকল ভুয়া দলিল পরীক্ষা করে মৌজার নাম বিক্রেতা বিক্রেতার খতিয়ান ও দাগ নম্বর পরীক্ষা করে সর্বশেষ বিক্রেতার মালিকানা স্বত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট এসিল্যান্ড অফিস অথবা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে দাগ খতিয়ান মৌজা ম্যাপ জে এল নং রেকর্ড নামজারি জরিপ সংক্রান্ত তথ্য এবং জমির প্রকৃত জানা যাবে

১৬। জমির খাজনা ভূমি কর আদায়ের নিলাম হয়েছে কিনা তা যাচাই করা অবশ্য

১৭।  জমি হওয়ার কারণ মালিকানা বিলুপ্ত হয়েছে কিনা তা যাচাই করা অবশ্যক

১৮।  সংশ্লিষ্ট জমি সভা কোন সংস্থা কে ঋণ গ্রহণের মর্গের দেওয়া আছে কিনা তা যাচাই করা অবশ্য

১৯। প্রস্তাবিত জমিতে কোন বিরোধ মামলা-মোকদ্দমা আছে কিনা তা পার্শ্ববর্তী মালিকদের নিকট হতে অনুসন্ধান করে যাচাই করা যেতে পারে

২০।  এজমালি তথা যৌথ মালিকানা সম্পত্তি ক্রয় করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মতি অথবা আমমোক্তারনামা দেওয়া আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া আবশ্যক।

২১। বিক্রয় প্রস্তাবিত জমি গত 30 বছরে কতবার হস্তান্তরিত হয়েছে তা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে তল্লাশীকারক দিয়ে যাচাই করা ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য জানা যেতে পারে।


 জমি ক্রয়ের পর ক্রেতা মালিকের বক্তব্য জমি করার পর নতুন ভূমি মালিকের কতগুলি অবশ্যকর্তব্য আছে কর্তব্যরত পালন না করলে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।


 সুতরাং জমি ক্রয় পর একজন ভূমি মালিকের কর্তব্য হলো


  •  জমি রেজিস্ট্রি করার পর ফরিদা জমি দখল সীমানা নির্ধারণ এবং জমির ব্যবহার তথা চাষাবাদ বাড়ি ঘর নির্মাণ করা।
  •  রেস্ট্রি অফিসের দলিল গ্রহণ করা।
  •  মূল দলিল প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দলিলের সার্টিফাইড কপি নেওয়ার ব্যবস্থা করা।
  •  নামজারি করার জন্য সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসে দলিলের সত্যায়িত কপি সহ নির্ধারিত ফিস দিয়ে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে মিউটেশন নামজারি পড়ানোর ব্যবস্থা করা।
  •  নামজারি মঞ্জুর হলে আদেশপত্রে সার্টিফাইড কপি এবং নতুন খতিয়ানের সার্টিফাইড গ্রহণ করার ব্যবস্থা কর ।
  • মিউটেশন মোতাবেক জমির খাজনা ভূমি উন্নয়ন কর নিয়মিত পরিশোধ করার ব্যবস্থা করা।
  •  জমি করার পর ও বিক্রেতার দখলে রাখা অত্যন্ত বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ কারণ ।অসাধু মালিক কর্তৃক দেখিয়ে অন্য ক্রেতার নিকট বিক্রি করার সুযোগ পাবে।
  • মিউটেশন তথা নামজারি না করলে মালিক কর্তৃক পুনরায় জমি বিক্রয় করার সুযোগ থাকে।
  •  মালিকানা প্রমাণের জন্য সাধারণত চারটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া যেতে পারে।
  •  দলিল সঠিক আছে কিনা।
  •  জমি দখলে আছে কিনা।
  •  খাজনা দেওয়ার পূর্বে সত্য হলো মিউটেশন বানান জারি।
  •  খতিয়ান ও পর্চা মধ্যে মিল আছে কিনা।
  •  নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করলে জমি নিলাম হয়ে যেতে পারে।
  •  ভালোভাবে সীমানা চিহ্নিত করে না রাখলে অন্যরা অনধিকার প্রবেশ করার সুযোগ পাবে।
  •  ভূমি মালিকের দায়িত্ব ভূমি থাকো আর নিয়মিত পরিশোধ করা জমির ব্যবহার তথা চাষাবাদ বা অন্য কার্যক্রম ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।

 বাংলাদেশের প্রায় 70 পার্সেন্ট লোক কোন না কোনভাবে ভূমির উপর নির্ভরশীল এদেশে ভূমি একটি বেশ সংবেদনশীল বিভিন্ন কারণে ভূমি বিরোধ সৃষ্টি হয় প্রধান কারন গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।


  •  যৌথ পরিবারের মধ্যে ভাগ বন্টন সংক্রান্ত বিরোধ
  •  পতিত জমির প্রকৃত মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা
  •  জমির দলিল সঠিকভাবে রেজিস্ট্রি না করা
  •  ভূমি অফিসের রেকর্ড সংগ্রহ জটিলতা  ত্রুটি
  •  পৈত্রিক সম্পত্তি বন্টনের অত্যাচার অভাব
  •  যৌথ পরিবারের বিশেষভাবে মেয়ে সন্তানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির বন্টন না করা ইত্যাদি।

 জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ দেওয়ানী আদালতের নিষ্পত্তিযোগ্য দেওয়ানী আদালতের বিচার কার্য সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয় যার ফলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বর্গ নিজেরা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে জমির দখল নিতে প্রচেষ্টা হয় শুরুতে জমির বিরোধ কে কেন্দ্র করে এলাকায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা সহ শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা দেখা দেয় দেখা গেছে বাংলাদেশে ফৌজদারি মামলা ভূমি সংক্রান্ত ঘটনা ঘটনার জের হিসেবে হয়ে থাকে সুতরাং জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সকলের অধিক যত্নবান ও সতর্ক হওয়া উচিত।


Previous Post
Next Post
Related Posts